কমনওয়েলথের পর ইসলামিক গেমসেও বাজল বিদায়ের ঘন্টা। বাংলাদেশ কমনওয়েলথে কোনো পদক না পেলেও ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে পেয়েছে তিন পদক। তিন পদকের তিনটিই এসেছে আরচ্যারি থেকে।

পদকের বিচারে কমনওয়েলথের চেয়ে সফল ছিল বাংলাদেশের ইসলামিক গেমস। তবে গত আসরের তুলনায় আবার সাফল্যে পেছনে। আজারবাইজান সলিডারিটি গেমসে বাংলাদেশ স্বর্ণ পদক জিতলেও এই আসরে পারেনি। গত আসরে স্বর্ণ এসেছিল শুটিংয়ে। এবার রাইফল, পিস্তল ইভেন্ট না থাকায় বাংলাদেশ স্বর্ণের লড়াই করতে পারেনি শুটিংয়ে। 

এবারের গেমসে বাংলাদেশের আশা ভরসার প্রতীক ছিল আরচ্যারি। তিনটি পদক এই খেলা থেকে আসলেও কোনো স্বর্ণ আসেনি। তিন পদক আসায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের কিছুটা মুখ রক্ষা হলেও কোচ মার্টিন ফ্রেডরিক মোটেও সন্তুষ্ট নন, ‘ব্যক্তিগত ইভেন্টে আমাদের কোনো পদক নেই। এটা খুব হতাশার।’

এবারের গেমসে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পদক রৌপ্য। কম্পাউন্ড নারী দলগত ইভেন্টে প্রতিযোগী সংখ্যাই ছিল মাত্র ২। ফলে এই রৌপ্য জয়ে তেমন খুশি হতে পারেননি মার্টিন। বাংলাদেশের আরচ্যাররা প্রায় প্রতি মাসেই আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট খেলছেন। সেই অনুপাতে এই গেমসে আরচ্যাররা সফল হতে পারেননি। 

বাংলাদেশের এই গেমস থেকে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি ইমরানুর রহমান। ১০.০১ সেকেন্ড টাইমিংয়ে দৌড়িয়ে তিনি সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। গেমসের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ইভেন্টে তিনি ষষ্ঠ হয়েছেন। বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা ইমরানের পারফরম্যান্সকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন, ‘গেমসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ১০০ মিটার স্প্রিন্ট। সব দেশের সেরা স্প্রিন্টাররা দৌড়ায় সেখানে বাংলাদেশের দ্রুততম মানব ষষ্ঠ হয়েছে সেটা অনেক ভালো পারফরম্যান্স।’ ১০.০১ সেকেন্ড দৌড়ে বাংলাদেশ তো বটেই অনেক দেশকেই তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ইমরান। 

ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে বাংলাদেশ ১১ টি ডিসিপ্লিনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে ফাইনালে উঠেছে মাত্র তিন ডিসিপ্লিনে (অ্যাথলেটিকস, জিমন্যাস্টিকস ও আরচ্যারি)। গেমসের অন্যতম ডিসিপ্লিন সাতারে সেমিফাইনালে খেলেছে বাংলাদেশ। কমনওয়েলথ গেমসের পর ইসলামিক গেমসেও ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে টেবিল টেনিস দল। জিমন্যাস্টিকস ও অ্যাথলেটিক্সে প্রবাসী নির্ভর হলেও টেবিল টেনিস দেশীয় খেলোয়াড়দের নিয়ে ক্যাম্প করে দুটি আন্তর্জাতিক গেমসে জয়ের দেখা পেয়েছে। 

বাংলাদেশের সামগ্রিক পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা, ‘বেশ কয়েকটি খেলায় আমাদের খেলোয়াড়রা জাতীয় রেকর্ডের চেয়ে ভালো পারফরম্যান্স করেছে৷ আমরা চাই ভবিষ্যতে আরো উন্নতি করুক এবং বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন সর্বাত্মক সহায়তা করতে প্রস্তুত।’

অ্যাথলেটিকস, জিমন্যাস্টিকসে বাংলাদেশ পাঁচ ছয়ে থাকলেও ব্রোঞ্জ থেকে ব্যবধানটা বিস্তর। এই পার্থক্য ঘোচাতে হলে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক গেমসে খেলার আগেও কয়েকটি ফেডারেশন জায়গা স্বল্পতা নিয়ে সংকটে ছিল। সেই সংকটে থেকেও ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে ফাইনাল খেলেছেন জিমন্যাস্ট আবু সাইদ রাফি ষষ্ঠ হয়েছেন।

ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে বাংলাদেশ 

আরচ্যারি - ১ রৌপ্য ও ২ ব্রোঞ্জ 
অ্যাথলেটিকস - ষষ্ঠ ( ১০০ মিটার)  সপ্তম ( হাইজাম্প) 
ভারোত্তোলন - চতুর্থ 
জিমন্যাস্টিকস - পঞ্চম ও ষষ্ঠ 
সাঁতার - সেমিফাইনাল
হ্যান্ডবল- সপ্তম
ফেন্সিং- প্রি-কোয়ার্টার 
টেবিল টেনিস - কোয়ার্টার 
শুটিং - প্রাথমিক 
কারাতে - প্রাথমিক পর্ব
কুস্তি- প্রাথমিক পর্ব

এজেড/এইচএমএ