সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোর নির্বাচন হয় সমঝোতার ভিত্তিতে। দুই পক্ষের দর কষাকষিতে একক প্যানেল জমা হয় ফেডারেশনগুলোতে। ফেডারেশন নির্বাচনে যেখানে ভোটাভুটি হয় না, সেখানে উল্টো ঘটনা ঘটল চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থায়। জেলা সংস্থার নির্বাচনে অংশ নিয়ে হেরে গেছেন সাইক্লিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক তাহের-উল-আলম চৌধুরি স্বপন।

চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থায় সাধারণ সম্পাদক বাদে বাকি সব পদেই নির্বাচন হয়েছে। লড়াইও হয়েছে বেশ হাড্ডাহাড্ডি। অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছিলেন দুই ফেডারেশনের দুই সাধারণ সম্পাদক। দাবা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম মাত্র এক ভোটের ব্যবধানে অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক পদে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন। দাবা ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জিতলেও, সাইক্লিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক তাহের-উল-আলম চৌধুরি স্বপন সহ-সভাপতি পদে হেরেছেন। সহ-সভাপতি ৯ প্রার্থীর মধ্যে তিনি মাত্র ৮৭ ভোট পেয়ে অষ্টম হন। 

জাতীয় ক্রীড়া ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার ঘটনা তেমন নেই। তাই ক্রীড়াঙ্গনে এ নিয়ে বেশ আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। শামীম ও স্বপন দুই জনই চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বিশেষ করে শামীম চট্টগ্রাম মোহামেডানের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জেলা ক্রীড়া সংস্থার কমিটিতেও আছেন অনেকদিন। জাতীয় ফেডারেশনে থাকলেও তারা নিজ জেলার সঙ্গেও সম্পৃক্ত থাকেন।

সাইক্লিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক তাহের-উল-আলম চৌধুরি

ফেডারেশনের এক সেক্রেটারির হারের পাশাপাশি কোষাধ্যক্ষ পদেও ঘটেছে বিশেষ ঘটনা। ২৫২ জন ভোটারের মধ্যে ২৪০ জন এই পদে ভোট দিয়েছেন। এর মধ্যে ৬৩ ভোটই বাতিল হয়েছে। ক্রীড়াঙ্গনে কোনো নির্বাচনে এত ভোট বাতিলের ঘটনা আগে রয়েছে কিনা সংশয় অনেকেরই। ১৭৭ বৈধ ভোটের মধ্যে শাহাবুদ্দিন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর ১১০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। ৬৭ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন ওয়াহিদ দুলাল। তিনি দেশে নতুন এক খেলা চুকবল অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি। 

দেশের সচল ও সচ্ছল জেলা ক্রীড়া সংস্থার মধ্যে চট্টগ্রাম সবার উপরে। অন্য সব পদে নির্বাচন হলেও মূল পদ সাধারণ সম্পাদকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন আ জ ম নাসির। তিনি জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক পরিষদ ফোরামের সভাপতি। ফেডারেশনগুলোর নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের চাবিকাঠি থাকে এই ফোরামের হাতেই। সাম্প্রতিক সময়ে তার নেতৃত্ব ও নির্দেশনায় কয়েকটি ফেডারেশনের নির্বাচনে একক প্যানেল গঠিত হয়েছে। তার নিজ সংস্থার নির্বাচনে অবশ্য সমঝোতার পরিবর্তে হয়েছে ভোটাভুটি। যেটা মূলত ক্রীড়া গণতন্ত্রে আবশ্যক। 

ফেডারেশনগুলোর নির্বাচন হয় জেলা, বিভাগ, ক্লাব ও সংস্থার ভোটে। জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচনে জেলার অন্তর্গত বিভিন্ন খেলায় অংশগ্রহণকারী ক্লাবগুলোই মূলত অংশগ্রহণ করে। ফুটবল ও ক্রিকেট বোর্ডের মতো শীর্ষ ফেডারেশনগুলোর ভোটার সংখ্যা যেখানে দেড়শ’র মতো, সেখানে চট্টগ্রাম জেলারই ভোটার ২৫২। 

এজেড/এএইচএস