বিশ্বকাপ ফাইনালে পৌঁছার পর কোচ মার্টিন ফ্রেডরিক (সর্বডানে) ও আরচ্যারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজিবউদ্দীন আহমেদের (মাঝে) সঙ্গে রোমান ও দিয়া/আরচ্যারি ফেডারেশন

সুইজারল্যান্ডের লুজানে বিশ্বকাপ আরচ্যারির মিশ্র রিকার্ভের ফাইনালে উঠে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন রোমান সানা ও দিয়া সিদ্দিকী। আরচ্যারি দলের জার্মান কোচ মার্টিন ফ্রেডরিক নিজেও খানিকটা বিস্ময় প্রকাশ করে লুজান থেকে ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘দেড় বছর আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার বাইরে থেকে বিশ্বকাপের মতো আসরে ফাইনালে ওঠা সত্যি অনেকটা অবাক করার মতো।’

রোমান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরীক্ষিত আরচ্যার, তার সাফল্যটা যেন অনুমিতই। কোচ ফ্রেডরিক তাই দিয়ার প্রশংসাই একটু বেশি করলেন, ‘মাত্র ১৭ বছর বয়স তার। পরিবেশ, পরিস্থিতি সব কিছু সামলে যেভাবে পারফরম করেছে সত্যি অবিশ্বাস্য।’

রোমান সানা বাংলাদেশের আরচ্যারির সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন হয়ে উঠেছেন অনেক আগেই। মিশ্র বিভাগে ফাইনালে উঠলেও তার নিজের সেরা ইভেন্ট ব্যক্তিগত রিকার্ভে কোয়ার্টারে উঠতে পারেননি। এই ব্যাপারে মার্টিনের মূল্যায়ন, ‘সে ভালোই খেলছিল। কোয়ার্টারের আগের রাউন্ডে তার সঙ্গে খেলা পড়ে বিশ্বের সেরা আরচ্যারের (ব্র্যাডি এলিসন)।’ আরচ্যারিতে পারফরম্যান্সের পাশাপাশি দিনটিও নিজের হতে হয় সেটিও জানালেন জার্মান কোচ, ‘মিশ্র বিভাগে সব কিছুই রোমান-দিয়ার পক্ষে ছিল। বাতাস, পরিবেশ এবং অসাধারণ পারফরম্যান্স। তারা দুই জনই এক্স স্কোর করেছে কয়েকবার। দিনটি আসলে তাদেরই ছিল। কানাডা, জার্মানির মতো প্রতিপক্ষকে হারিয়েছে। সুবিধাজনক দিনে সেরা পারফরম্যান্স করায় এমন ফলাফল হয়েছে।’

রোমান দিয়ার এই পারফরম্যান্স বাংলাদেশের আরচ্যারির উন্নতির উদাহরণ বলে মনে করেন কোচ, ‘আরচ্যারি সঠিক পথেই রয়েছে এই ফলাফল সেটাই প্রমাণ৷ আরও কয়েকবছর পর আরও অনেকে উঠে আসবে যারা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিয়মিত পদক পাবে৷’

২০১৯ সালে রোমান হল্যান্ডে বিশ্ব আরচ্যারি চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন। এবার বিশ্বকাপের ফাইনাল হলেও সেই প্রতিযোগিতাকে এগিয়ে রাখছেন কোচ,  ‘আরচ্যারিতে বছরে চারটি বিশ্বকাপ হয়। দুটি ইউরোপে, একটি আমেরিকায় আর একটি এশিয়ায়। আর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ হয় দু বছর পর পর। ২০১৯ এর টা ছিল চ্যাম্পিয়নশিপ। চ্যাম্পিয়নশিপের মর্যাদা ও গুরুত্ব বিশ্বকাপের চেয়ে বেশি।’

আগামী মাসে প্যারিসে রয়েছে আরেকটি বিশ্বকাপ। সেখান থেকে অবশ্য অলিম্পিকের কোটা প্লেসের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের জন্য কোটা প্লেস নিশ্চিত করা কঠিন হলেও সুইজারল্যান্ডের পারফরম্যান্স মানসিকভাবে এগিয়ে কিছুটা এগিয়ে রাখবে আরচ্যারদের, ‘কোটা প্লেসের জন্য অনেক বড় বড় দেশ লড়বে। খুবই কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে৷ তবে সুইজারল্যান্ডের এই পারফরম্যান্স আরচ্যারদের আরো ভালো খেলতে সহায়তা করবে বলে মনে করি।’

এজেড/এনইউ