দুবাইয়ের স্বর্ণের দোকানে মুশফিক
বাংলাদেশের বিশ্বকাপ শেষে হয়েছে গত ৪ নভেম্বর। কিন্তু দলের অন্য সতীর্থের সঙ্গে দেশে ফেরেননি তিনি। ছুটি কাটাতে থেকে গিয়েছেন দুবাইয়ে। ছুটির আমেজেই আছেন মুশফিকুর রহিম। নানা দেশের পর্যটকে মুখর মধ্যপ্রাচ্যের শহরটিতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সময়টা বেশ কাটছে জাতীয় দলের এই তারকা ক্রিকেটারের। সোমবার রাতে স্বর্ণের বাজারে দেখা গেল সময়ের আলোচিত এই ক্রিকেটারকে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাণিজ্যিক রাজধানী দেরা দুবাই স্বর্ণের জন্য বিশ্বখ্যাত। স্থানীয়রা বলেন, ল্যান্ড অব গোল্ড। অসংখ্য দোকানে বাহারি সব স্বর্ণের ডিজাইন চারপাশে, চোখ ধাধিয়ে যায়। সংযুক্ত আরব আমিরাতে যারাই বেড়াতে আসেন তাদের বেশির ভাগেরই এখানে পা পড়ে। কারণ একটাই স্বর্ণের হাতছানি। মুশফিকও এখানে আসলেন সোমবার রাতে, স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে। কেনাকাটাও করলেন। তখনই ধরা পড়েন ঢাকা পোস্টের আমিরাত প্রতিনিধি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুনের ক্যামেরায়।
বিজ্ঞাপন
দুবাইয়ের স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৮টা তখন। দেরা দুবাইয়ের স্বর্ণের দোকানের ঠিক সামনে দেখা মিলল মুশফিকের। মুখে মাস্ক, ঠিক চেনা যাচ্ছিল না। এ কারণেই নিশ্চিত হতে প্রশ্ন করা হয়-আপনি কী মুশফিক? তিনি ইতস্তত করে বলেন, ‘হ্যাঁ আমি মুশফিক।’ কেমন আছেন?-এই প্রশ্নেরও উত্তর মিলল। জানালেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, ভালো আছি।’ এরপরই অবশ্য আর কোন প্রশ্নের সুযোগ দেননি তিনি। দ্রুত পার্কিংয়ের দিকে চলে যান, কেনাকাটা শেষ- দাঁড়িয়ে থাকার কোন মানে হয় না। অথবা হয়তো প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভিড় আর প্রশ্নও এড়াতে চেয়েছিলেন তিনি!
তবে সেলফির আবদার ঠিকই রক্ষা করেন ঢাকা পোস্ট সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রতিনিধির। মাস্ক খুলে, সন্তান কোলে নিয়ে দাঁড়ালেন ক্যামেরার সামনে। তখন তার হাতে দেখা গিয়েছে শপিং ব্যাগ। স্বর্ণের দোকানেই গিয়েছিলেন তিনি। কিছুটা কমদামে এখানে স্বর্ণ মেলে। মুশফিক নিজেও সুযোগটা নিলেন। স্থানীয় গোল্ড সোক মার্কেটের মালাবার গোল্ড এন্ড ডায়মন্ডস দোকান থেকে কেনাকাটা সারেন তিনি। এটি দুবাইয়ের নামকরা স্বর্ণের দোকানের একটি।
বিজ্ঞাপন
মুশফিকের সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী জান্নাতুল কেফায়াত মন্ডি। আর ছেলে শাহরুজ রহীম মায়ান। তাদের নিয়ে এখন দুবাইয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন মুশফিক। কেনাকাটাও করছেন। যদিও বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ের পর তার অন্য সতীর্থরা চলে গেছেন দেশে। তার ভায়রা ভাই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর তাসকিন আহমেদ ও লিটন দাসও রয়ে গেছেন দুবাইয়ে। একদিন আগে দুবাই এক্সপ্রোতে দেখা গেছে সমালোচনার তোপে থাকা লিটনকে। সস্ত্রীক সেখানে বেড়াতে যান তিনি।
আসলে জীবন তো আর থেমে থাকে না। থামিয়ে রাখাও যায় না। এবার যদিও দুঃস্বপ্নের মতো একটা বিশ্বকাপ মিশন ছিল বাংলাদেশের। টি-টোয়েন্টির এই বিশ্বসেরার লড়াইয়ে মূল পর্বে পাঁচটি ম্যাচ খেলে দল হেরেছে পাঁচটিতেই। জিততে জিততে হার দেখেছে দুটি ম্যাচে। সঙ্গে মাঠ আর মাঠের বাইরে কত সমালোচনার ঝড়। যেখানে অন্যতম চরিত্র ছিলেন মুশফিকও। সমালোচনা সহ্য করতে না পেরে একটা বেফাঁস মন্তব্যও করে বসেন। সমালোচকদের আয়নায় মুখ দেখতে বলেন তিনি। যদিও নিজে এরপরই টানা ব্যর্থ হয়েছেন ব্যাট হাতে। দৃষ্টিকটুভাবে আউটও হয়েছেন। তারপর থেকে তো তার আয়না তত্ত্ব রীতিমতো ভাইরাল!
এত সব বিতর্ক যখন ঘিরে ধরেছে তখন বিশ্বকাপ মিশন শেষ করে দলের সঙ্গে না ফিরে চুটিয়ে ছুটি উপভোগ করছেন মুশফিক। কে জানে দেশের গণমাধ্যম এড়াতেই হয়তো আপাতত এই কৌশল নিয়েছেন। কিংবা টানা বায়ো-বাবলের কারাগারে থেকে হয়তো হাঁপিয়েও উঠেছিলেন, এবার দুবাইয়ের আলো-বাতাসে যদি কিছুটা স্বস্তি মেলে। স্ত্রী-সন্তান পাশে। মরুর দেশে শপিং-বেড়ানোতে দুঃস্বপ্নের প্রহরটা যদি শেষ হয় মুশির!
এটি/এমএইচ