আগ্রহ ও অংশগ্রহণ বাড়ছে নারী শরীর গঠনে
বছরের শেষ দিন আবার সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবার। এরপরও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের শহীদ শেখ কামাল অডিটরিয়াম লোকে লোকারণ্য। জাতীয় শরীর গঠন প্রতিযোগিতা দেখতে এই ভিড়। সেই ভিড় কয়েকটা জটলায় রুপ নিল নারী শরীর গঠন প্রতিযোগিতায় স্বর্ণ-রৌপ্য ও ব্রোঞ্জপদক জয়ী ঘোষণার পর।
গত বারের মতো এবার জাতীয় শরীর গঠনে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব অক্ষুণ্ণ রেখেছেন মাকসুদা মৌ। ধীরে ধীরে তিনি নিজেকে বাংলাদেশের নারী শরীর গঠনের পথিকৃৎ হয়ে উঠছেন। কিছু দিন আগে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাতেও বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। আজ স্বর্ণপদক জয়ের পর তার প্রতিক্রিয়া, ‘ভালো লাগছে অবশ্যই নিজের পদক ধরে রাখতে পেরে। বাংলাদেশের নারীরা শরীর গঠনে আগ্রহী হচ্ছে।’ মাকসুদার এই কথার প্রমাণ মেলে এবারের প্রতিযোগিতায় নারীদের অংশগ্রহণে। এবারের নারীদের প্রতিযোগিতায় ১৪ জন অংশগ্রহণ করেছেন। বিগত আসরে এর চেয়ে কম ছিল অংশ্রগহণকারী।
বিজ্ঞাপন
মৌয়ের কাছে পদক এখন অনেকটা নিয়মিত ও সহজাত বিষয় হলেও সিলেট সুনামগঞ্জের মেয়ে পপী রাণী দাসের কাছে পদকের স্বাদ ভিন্ন রকম। প্রথমবার অংশ নিয়ে ব্রোঞ্জ জেতায় এই নারীকে নিয়ে তার শুভানুধ্যায়ীদের জটলা। শরীর গঠন ফেডারেশনের কর্মকর্তারাও পপীকে এসে উৎসাহ দিলেন আগামীর জন্য।
ঢাকার বাইরে একটি জেলা থেকে নারীরা শরীর গঠন প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে বিষয়টি সহজ ছিল না। পদক জয়ের পর সেই দিনগুলোর কথা বলছিলেন পপী,‘ স্বাভাবিকভাবেই বাবা-মা প্রথমে রাজী ছিলেন না। আমার বোন এক্ষেত্রে সবচেয়ে সহযোগিতা করেছে। ওর সাহায্য না পেলে আমার এই প্রতিযোগিতায় আসা সম্ভব ছিল না।’ পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বোন পারুল দাস খানিকটা তৃপ্ত, ‘পপীর শরীর গঠনের প্রতি আগ্রহ ছিল। যার যে কাজে আগ্রহ সেটা করতে দেয়া উচিত। আমি বাবা-মা’কে বুঝিয়েছি। তারা কিছু দিন পর বুঝতে সক্ষম হয়েছে।’
বিজ্ঞাপন
ক্রীড়াঙ্গনে নারীরা এগিয়ে চলছে। ফুটবল, ক্রিকেট দলগত খেলা ছাড়াও ব্যক্তিগত অনেক খেলায় নারীরা দুর্দান্ত পারফর্ম করছেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে। অন্য খেলায় না গিয়ে শরীর গঠনের মতো খেলায় আসার কারণ সম্পর্কে পপী বলেন, ‘শরীরের ওজন বেড়ে যাচ্ছিল। তখন থেকে শরীরের প্রতি বেশি সচেতন হই। জিমও করেছি। সুনামগঞ্জের মতো জেলায় মেয়েরা জিম করবে এটা অনেকের কাছেই অবাক করার মতো ছিল। যখন জিম, ডায়েট শুরু করলাম তখন ভাবলাম তাহলে প্রতিযোগিতায় কেন অংশগ্রহণ করব না।’
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে পদকও পেয়েছেন সিলেটে বিবিএতে অধ্যয়নরত এই শিক্ষার্থী, ‘মঞ্চে যখন উঠি তখন কিছুটা নার্ভাস ছিলাম। দর্শকরা ভালোই উৎসাহ দিয়েছে অবশ্য।’
এজেড/এনইউ