বিগত সময়ে টেনিস নানা নেতিবাচক শিরোনামে ছিল। এক যুগের পর নির্বাচিত কমিটির অধীনে টেনিস ফেডারেশন এখন সুদিনের পথে হাটছে। শুরুর দিকে কিছু ধাক্কা ছিল। সেই ধাক্কা কাটিয়ে এখন সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার ভাবনা টেনিস ফেডারেশনের। গত ১ জুলাই বর্তমান নির্বাচিত কমিটি দায়িত্ব গ্রহণ করে। দায়িত্ব গ্রহণ করেই এই কমিটি বড় অঙ্কের বিদ্যুৎ বিল বকেয়ার চাপে পড়ে। প্রথমে কিছু দিন বিদ্যুৎহীনভাবে কার্যক্রম চলেছে। এরপর সেই বিল পরিশোধ করে এখন বেশ সুসজ্জিত পরিবেশ ফিরেছে শাহবাগস্থ শেখ জামাল টেনিস কমপ্লেক্স।

নতুন কমিটি চার মাস অতিবাহিত করার পর আজ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিল। সেখানে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ মোহাম্মদ হায়দার বিগত চার মাস ও আগামী বছরের কর্মকান্ড তুলে ধরেন। রমনাস্থ টেনিস কমপ্লেক্সে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট হয় না বেশ কয়েক বছর। আগামী বছর সেই অচলায়তন ভাঙছে ফেডারেশন, ‘আন্তর্জাতিক ও এশিয়ান টেনিস ফেডারেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই টেনিস কমপ্লেক্সে কয়েকটি টুর্নামেন্টের স্বাগতিকের ভেন্যু করেছি। এর ফলে আমরা টেনিসকে পুনরায় জাগরণের চেষ্টা করব।’
 
আগামী বছর জানুয়ারি থেকে মে’র মধ্যে ছয়টি টুর্নামেন্ট আয়োজন করবে বাংলাদেশ। এর মধ্যে পাচটিই জুনিয়র। সিনিয়র বড় টুর্নামেন্ট আয়োজন হলে ক্রীড়াঙ্গনে টেনিস নিয়ে সাড়া পড়ত। তবে টেনিস ফেডারেশনের পরিকল্পনাটা বাস্তবভিত্তিক, ‘সিনিয়র পর্যায়ে টুর্নামেন্ট আয়োজনও করা যেত। তবে সেটা ফলপ্রসূ হতো না। আমরা সেভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারব না। অন্য দেশ ট্রফি ও পুরস্কার নেবে। জুনিয়র পর্যায়ে আমাদের ভালো সম্ভাবনা রয়েছে। জুনিয়র পর্যায়ে বেশি খেলা হলে এরা বেশি শাণিত হবে। ৪-৫ বছর পর যখন তারা সিনিয়র হবে তখন আমাদের দল শক্তিশালী হবে।’ 

১২-১৫ বছর বয়সী খেলোয়াড়দের নিয়ে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে টেনিস ফেডারেশন, ‘অন্য সকল খেলার তুলনায় টেনিস খানিকটা ভিন্ন। এখানে অর্থ খরচ রয়েছে। ফলে স্বচ্ছল অভিভাবকদের এখানে আসা দরকার। যারা সন্তানের পেছনে খরচ করতে পারবে। আমরা এ রকম কয়েকজন অভিভাবক পেয়েছি। তরুণদের মেধা ও সম্ভাবনা থাকলে ফেডারেশন ট্যাকনিক্যাল সাপোর্ট অবশ্যই দেবে এবং বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করলে ফেডারেশনও খরচ দেয় কিন্তু অনেক সময় খেলোয়াড়ের পরিবারকে কিছু টুর্নামেন্ট নিজ খরচে খেলতে হয়’ বলেন সাধারণ সম্পাদক হায়দার।

নতুন কমিটি চার মাসের মধ্যে বিদ্যুৎ বিলের বোঝা কমিয়ে ইতোমধ্যে খেলোয়াড়দের আবাসন ব্যবস্থা উন্নত করেছে। পাশাপাশি কমপ্লেক্স ও অফিস কক্ষগুলোতেও সৌন্দর্য্যবর্ধন করা হয়েছে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বেশ কয়েক কোটি টাকা খরচে এই রমনা টেনিস কমপ্লেক্সের আধুনিকায়ন করেছিল। কিন্তু সাংগঠনিক দক্ষতার অভাবে ফেডারেশন সেভাবে কাজে লাগাতে পারেনি। 

জুনিয়রদের পাশাপাশি জেলা পর্যায়েও টেনিস ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে এই কমিটির। এই মাসে মাগুরাতে একটি টুর্নামেন্ট আয়োজন হবে। যে সকল জেলায় টেনিস কোর্ট রয়েছে সেই টেনিস কোর্টে তরুণ খেলোয়াড়দের খেলার সুযোগ করে দেয়ার জন্য জেলা প্রশাসকদের সঙ্গেও আলোচনা করছে ফেডারেশন।

চার মাসে খানিকটা সচল হয়েছে টেনিস। এই গতি আগামী সাড়ে তিন বছর বজায় থাকলে মলিন থেকে বর্ণিলের পথে হাটবে টেনিস। 

এজেড/এনইআর