গ্রামীণফোন বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো নিয়ে এসেছে ই-সিম। ওয়্যারলেস ডিভাইস থেকে শুরু করে বাসা, অফিস, স্কুল, স্টোরে স্মার্ট ডিভাইসের ব্যবহারে বিপ্লব ঘটেছে। ই-সিম তারই একটি অংশ।

ই-সিম মাধ্যমে বিশ্বজুড়েই নিরবচ্ছিন্ন কানেক্টিভিটি সেবা নিশ্চিত হবে। গ্রাহকরা ই-সিমে একাধিক নম্বর ব্যবহার করতে পারবেন। সেবাটি যেহেতু ডিভাইসের সাথে এমবেড করা থাকবে, তাই এক্ষেত্রে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে কিছু করার প্রয়োজন হবে না। 

ই-সিম মানে এম্বেডেড সিম। অর্থাৎ একধরণের সিম, যেটা ব্যবহার করতে ফোনে কোনও রকম সিম কার্ড ঢুকাতে হয় না। এতে প্লাস্টিকের ব্যবহারও কম হয়। ই-সিমের মাধ্যমে কমবে প্রাকৃতিক বর্জ্য।

ই-সিম আর নরমাল সিমের পার্থক্য কী?

নরমাল সিম (বর্তমান সিম কার্ড) হচ্ছে প্লাস্টিক ও বিভিন্ন উপাদানে তৈরি একধরনের বস্তু। আর ই-সিম হচ্ছে অনেকটা মোবাইল অ্যাপের মতো। যা স্মার্টফোনে কিআর কোড স্ক্যানের মাধ্যমে অ্যাকটিভ করে ব্যবহার করতে পারবেন।

যেসব হ্যান্ডসেটে ই-সিম ব্যবহার করা যাবে-

প্রাথমিক ভাবে আইফোন, স্যামসাং ও গুগল পিক্সেলের নির্ধারিত কিছু মডেলের স্মার্টফোনে গ্রামীণফোনের ই-সিম ব্যবহার করা যাবে।

আইফোন ১৩ সিরিজ, আইফোন ১২ সিরিজ, আইফোন ১১ সিরিজ, আইফোন এসই, আইফোন এক্সএস, আইফোন এক্সএস ম্যাক্স, আইফোন এক্সআর, আইপ্যাড প্রো ১২.৯ ইঞ্চি (চতুর্থ প্রজন্ম), আইপ্যাড প্রো ১২.৯ ইঞ্চি (তৃতীয় প্রজন্ম), আইপ্যাড প্রো ১১ ইঞ্চি (দ্বিতীয় প্রজন্ম), আইপ্যাড প্রো ১১ ইঞ্চি (প্রথম প্রজন্ম), আইপ্যাড এয়ার (চতুর্থ প্রজন্ম), আইপ্যাড এয়ার (তৃতীয় প্রজন্ম), আইপ্যাড (অষ্টম প্রজন্ম), আইপ্যাড (সপ্তম প্রজন্ম), আইপ্যাড মিনি (পঞ্চম প্রজন্ম)।

স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২২ ফাইভজি, স্যামসাং আলট্রা ফাইভজি এস২২+, স্যামসাং ফোল্ড এলটিই, স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফোল্ড থ্রি ফাইভজি, স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ ফাইভ জি, স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফ্লিপ, স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফোল্ড টু ফাইভজি, স্যামসাং গ্যালাক্সি ফোল্ড।

গুগল পিক্সেল সিক্স প্রো, গুগল পিক্সেল সিক্স, গুগল পিক্সেল ফাইভ-এ ফাইভজি, গুগল পিক্সেল ফাইভ, গুগল পিক্সেল ফোর এ, গুগল পিক্সেল ফোর, গুগল পিক্সেল থ্রি, গুগল পিক্সেল টু।

এছাড়া এই লিংক থেকে ই-সিম সাপোর্টেড ডিভাইসের পুরো তালিকাটি দেখা যাবে।

নতুন ই-সিম অ্যাকটিভ করবেন যেভাবে-

জিপি সেন্টার বা  জিপি অনলাইন শপে গিয়ে ফিজিক্যাল সিমকে ই-সিমে রিপ্লেস করা যাবে। নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করে বর্তমান সিম ই-সিমে কনভার্ট করা যাবে। চাইলে নতুন ই-সিম নিতে পারবেন।

১. পছন্দ অনুযায়ী একটা প্ল্যান বেছে নিন।
২. আপনার মোবাইল নম্বরটি বেছে নিন।
৩. বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন পদ্ধতিটি সম্পন্ন করুন।
৪. আপনার হ্যান্ডসেটটিতে ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করুন।
৫. সিম কিটে দেওয়া QR কোডটি স্ক্যান করুন।
৬. আপনার হ্যান্ডসেট অনুযায়ী ধাপে ধাপে প্রসেসটি কমপ্লিট করুন।

আইফোনে ই-সিম অ্যাকটিভ করবেন যেভাবে-

১. প্রথমে সেটিংস-এ যেতে হবে।
২. সেলুলার অথবা মোবাইল ইন্টারনেটের সংযোগ বেছে নিন।
৩. ইন্টারনেট প্ল্যান যোগ করতে ট্যাপ করুন।
৪. QR কোডটি স্ক্যান করুন (অবশ্যই ডিভাইসটি ওয়াই-ফাই অথবা মোবাইল ইন্টারনেটের সাথে সংযোগ নিশ্চিত করে)।
৫. ধাপে ধাপে প্রসেসটি কমপ্লিট করুন।

এরপর আপনার মোবাইল প্ল্যান ডাউনলোড এবং ই-সিম অ্যাক্টিভেট হয়ে যাবে।

স্যামসাং ফোনে ই-সিম অ্যাকটিভ করবেন যেভাবে-

১. সেটিংস-এ যেতে হবে > কানেকশনস > সিম কার্ড ম্যানেজার।
২. ইন্টারনেট প্ল্যান যোগ করতে ট্যাপ করুন।
৩. QR কোডটি ব্যবহার করতে ট্যাপ করুন।
৪. ডিভাইসটি ওয়াই-ফাই অথবা মোবাইল ইন্টারনেটের সাথে সংযোগ নিশ্চিত করে QR কোডটি স্ক্যান করুন।
৫. ধাপে ধাপে প্রসেসটি কমপ্লিট করুন।

এরপর আপনার মোবাইল প্ল্যান ডাউনলোড এবং ই-সিম অ্যাক্টিভেট হয়ে যাবে।

ই-সিম নিয়ে যেসব বিষয় যা মনে রাখতে হবে-

১. QR কোডটি ইউনিক এবং এক বছরে সর্বোচ্চ দুইবার ব্যবহারযোগ্য। স্ক্যান করা হয়ে গেলে ক্যারিয়ার অ্যাড করা নিশ্চিত করতে হবে।
২. ই-সিম সেটিংস থেকে কখনই ডিলিট অপশন সিলেক্ট করবেন না। এটা হলে ই-সিম প্রোফাইলটা স্থায়ীভাবে ডিলিট হয়ে যাবে।
৩. প্রোফাইল ডিলিট হয়ে গেলে, গ্রাহককে পুনরায় QR কোড স্ক্যান করে, পূর্ববর্তী প্রক্রিয়াটি অনুসরণ করতে হবে।

এএ