বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েনের মূল্য প্রথমবারের মতো ৬০ হাজার মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। আর এর মাধ্যমে নতুন রেকর্ড ছুঁয়েছে অনলাইন এই মুদ্রাটি। শনিবার (১৩ মার্চ) অনলাইন এই মুদ্রাটির মূল্য রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছায়।

ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, চলতি বছর অসম্ভব দ্রুতগতিতে বেড়েছে বিটকয়েনের মূল্য। এমনকি সম্পদের প্রচলিত মানগুলোর সবকটিকে ছাড়িয়ে গেছে এই ক্রিপ্টোকারেন্সি। তবে রয়টার্স বলছে, অর্থ আদানপ্রদান বা লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পাওয়াই বিটকয়েনের মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম বড় কারণ।

কয়েনমার্কেটক্যাপ ওয়েবসাইট জানিয়েছে, শনিবার গ্রিনিচ মান সময় ১১টা ৪৯ মিনিটে বিটকয়েনের মূল্য রেকর্ড পরিমাণ সর্বোচ্চ ৬০ হাজার ১২ মার্কিন ডলারে পৌঁছায়। পরে এটা আবারও ৬০ হাজার ডলারে নেমে আসে।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলা জনপ্রিয় ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েনে ১৫০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করে। একই কাজ করেছে সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মাইক্রোস্ট্র্যাটিজি ইনকরপোরেটেড এবং টুইটার প্রধান জ্যাক ডরসির প্রতিষ্ঠান স্কয়ার। আসলে এই প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রচলিত আর্থিক সম্পদকে বিটকয়েনে রূপান্তর করছে। যার কারণে জনপ্রিয় এই ক্রিপ্টোকারেন্সির ওপর মানুষের আস্থা বেড়েছে বহুগুনে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, গত জানুয়ারি মাসেই বিটকয়েনে বিনিয়োগের ব্যাপারে অভ্যন্তরীণ ভাবে সিদ্ধান্ত নেয় টেসলা। সেই অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি ১৫০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগও করে। তবে সেই সিদ্ধান্ত কিছুদিন আগে প্রকাশ্যে আনে ইলন মাস্কের সংস্থা।

সেসময় টুইটারে টেসলা জানায়, ‘ভবিষ্যতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং মুনাফা বৃদ্ধির উদ্দেশে আমরা নগদ আর্থিক বিনিয়োগের নীতিতে কিছু পরিবর্তন এনেছি।’ ওই টুইটেই ১৫০ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগের কথা ঘোষণা করা হয়। আর এরপরই লাফিয়ে বেড়ে যায় বিটকয়েনের দাম।

গত জানুয়ারি মাসের শুরুর দিকে যেখানে একটি বিটকয়েনের দাম ছিল ৪০ হাজার মার্কিন ডলার, ফেব্রুয়ারি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে তা পৌঁছে যায় ৪৮ হাজার ডলারে। আর এর তিন সপ্তাহের মধ্যে অর্থাৎ মার্চের প্রথমার্ধের মধ্যেই জনপ্রিয় এই ক্রিপ্টোকারেন্সির মূল্য ছাড়িয়ে গেল ৬০ হাজার ডলার।

অনলাইনে মার্কিন ডলার, ব্রিটিশ পাউন্ড বা ইউরোর পাশাপাশি বিটকয়েন দিয়েও কেনাকাটা করা যায়। তবে অন্যান্য মুদ্রাব্যবস্থায় যেমন সংশ্লিষ্ট দেশের সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক জড়িত থাকে, বিটকয়েনের ক্ষেত্রে তা নয়।

বিটকয়েনে লেনদেনের ক্ষেত্রে কোনো ব্যাংকিং ব্যবস্থা নেই। ইলেকট্রনিক মাধ্যমে অর্থাৎ অনলাইনে দু’জন ব্যবহারকারীর মধ্যে সরাসরি (পিয়ার-টু-পিয়ার) আদান-প্রদান হয়। লেনদেনের নিরাপত্তার জন্য ব্যবহার করা হয় ক্রিপ্টোগ্রাফি নামে পরিচিত একটি পদ্ধতি।

টিএম