ঢাকায় ৩ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা শুরু
রাজধানীর বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী ১৩তম বিমান বাংলাদেশ ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ফেয়ার (বিটিটিএফ) ২০২৫ শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক দূত লুৎফে সিদ্দিকী। এই মেলা চলবে আগামী শনিবার (১ নভেম্বর) রাত ৮টা পর্যন্ত।
বিজ্ঞাপন
ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) আয়োজিত এই তিন দিনব্যাপী বৃহৎ আন্তর্জাতিক মেলার টাইটেল স্পন্সর হিসেবে থাকছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেড।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, ট্যুরিজম সেক্টর যুবকদের আকর্ষণের জায়গা। এটি আমাদের যুব সমাজের মেধার বিকাশে অতুলনীয় ভূমিকা রাখে। এর মাধ্যমে আমরা নতুন নতুন কালচার, সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে ও শিখতে পারছি।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, ট্যুরিজম বাংলাদেশেও একটি সম্ভাবনাময় সেক্টর হতে পারে। এটি দেশের জিডিপিতে বড় অবদান রাখতে পারে। সিঙ্গাপুর যেভাবে ট্যুরিজমকে কেন্দ্র করে তাদের অর্থনীতিকে অনেক দূরে এগিয়ে নিয়ে গেছে, আমরাও এই খাতে ঠিকমতো ফোকাস করতে পারলে অর্থনীতিতে অনেক বড়ো অবদান রাখা সম্ভব। ভিয়েতনামের মতো একটি দেশ যদি ট্যুরিজমে এত আকর্ষণ করতে পারে, আমাদের এত এত সৌন্দর্য থাকতেও আমরা কেন পারবো না?
মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন টোয়াবের ট্যুর অ্যান্ড ফেয়ার বিভাগের পরিচালক মো. তাসলিম আমিন শুভ। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ড. মো. শফিকুর রহমান, বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মো. মাইনুল হাসান, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সিইও নুজহাত ইয়াসমিন এবং বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান সায়মা শাহিন সুলতানা।
নুজহাত ইয়াসমিন বলেন, ট্যুরিজম এখন আর শখ নয়, এটি একটি প্রফেশন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। এটি দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারছে। এই সেক্টরের সঙ্গে লক্ষাধিক লোকের কর্মসংস্থান হচ্ছে।
শাহিন সুলতানা বলেন, ট্যুরিজমের মাধ্যমে আমরা আমাদের দেশের পণ্য ও সেবাকে বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত করতে পারছি। এটি সার্বিকভাবে দেশের অর্থনীতিতেও অবদান রাখছে।
অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য রাখেন টোয়াবের প্রেসিডেন্ট মো. রাফিউজ্জামান।
এবারের মেলায় পাকিস্তান, নেপাল ও ভুটানের জাতীয় পর্যটন সংস্থা ও ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশন ছাড়াও নেপাল, মালদ্বীপ, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, সংযুক্ত আরব আমিরাত, চীন, শ্রীলঙ্কা ও তুরস্কের ট্যুর অপারেটর ও ট্রাভেল এজেন্টরা অংশগ্রহণ করছে।
এবারের মেলা আগের তুলনায় অনেক বেশি আকর্ষণীয় ও জাঁকজমকপূর্ণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মেলায় ৪টি হলে ২০টি প্যাভিলিয়নসহ মোট ২২০টি স্টল থাকবে।
মেলায় আন্তর্জাতিক ও দেশি এয়ারলাইন্স, ট্যুরিজম বোর্ড, ট্রাভেল এজেন্সি, ট্যুর অপারেটর, হোটেল, রিসোর্ট, ক্রুজ লাইনার এবং হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রদর্শক হিসেবে অংশ নেবে।
মেলার সাইড লাইন ইভেন্টে বিটুবি সেশন, সেমিনার ও কান্ট্রি প্রেজেন্টেশন ছাড়াও প্রতিদিন সাংস্কৃতিক আয়োজন রয়েছে। এছাড়া পর্যটন গন্তব্যের ওপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী, আকর্ষণীয় র্যাফেল ড্র (শুধুমাত্র বিটিটিএফ অ্যাপ ব্যবহারকারীদের জন্য), বিকাশের ক্যাশব্যাক অফার (প্রবেশ মূল্যের উপর), পর্যটন সচেতনতা ও টেকসই উন্নয়নে গুরুত্ব তুলে ধরা হবে।
মেলার সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, বাংলাদেশ টুরিস্ট পুলিশ, ন্যাশনাল স্কিলস ডেভেলপমেন্ট অথরিটি এবং এফবিসিসিআই।
মেলায় প্রবেশ মূল্য রাখা হয়েছে ৫০ টাকা। তবে ছাত্র-ছাত্রী, মুক্তিযোদ্ধা এবং জুলাইযোদ্ধাদের জন্য মেলায় প্রবেশ ফ্রি।
এমএমএইচ/জেডএস