শিশুকে বাইকে তুলছেন? সতর্ক না হলে বড় বিপদ!

শহর কিংবা গ্রাম, প্রায়ই শিশুদের নিয়ে মোটরসাইকেলে যাতায়াত করতে দেখা যায় অভিভাবকদের। বর্তমান সময়ে এমন দৃশ্যের দেখা মিলছে হামেশাই। তবে ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও প্রয়োজনের তাগিদে অনেকসময় শিশুদের বাইকে তুলে রাইড করেন অভিভাবকেরা। এমন অবস্থায় প্রয়োজন সচেতনতার। তবে কিছু সতর্কতা মানলেই এই ভ্রমণ হতে পারে শিশুদের জন্য নিরাপদ।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মোটরসাইকেলে এখনও শিশু আরোহীদের জন্য নির্দিষ্ট সুরক্ষা ব্যবস্থা সীমিত। যেমন, শিশুদের জন্য আলাদা হেলমেট এর ব্যবস্থা না থাকা, পেছনের সিটে শিশুদের জন্য বিশেষ আসন ব্যবস্থা না থাকা- ইত্যাদি। অনেক রাইডারকে আবার দেখা যায়, কাঁধে কিডস ক্যারিয়ার ব্যাগে শিশুকে তুলে রাইড করছেন। এছাড়াও বাইকের পেছনে কিংবা সামনে বসে থাকা শিশুটির নিরাপত্তার জন্য নেই কোনো আলাদা হ্যান্ডেল কিংবা ব্যারিকেড। ফলে বড় কোনো ঝুঁকি এবং দুর্ঘটনার শঙ্কা থেকেই যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাইকে শিশুকে ওঠানোর আগে কিছু মৌলিক নিয়ম অবশ্যই মেনে চলা উচিত। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য যে, সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে দেশে এখনো তেমন কোন সচেতনতা গড়ে ওঠেনি। যার ফলে শিশুরা অনেক সময় সবচেয়ে বড় ঝুঁকির মুখে পড়ে। তাই শিশুদের জন্য বাইকে আলাদা সেফটি গিয়ার ও গাইডলাইন বাধ্যতামূলক করার দাবিও দিনদিন জোরালো হচ্ছে।
আরও পড়ুন
তবে চিন্তার কিছু নেই। বিশেষজ্ঞরা এ নিয়ে কিছু পরামর্শও দিয়েছেন। তারা মনে করেন, শিশুদের নিয়ে বাইকে ওঠার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সাধারণত ১২ বছরের নিচে শিশুদের বাইকে না তোলাই ভালো। যদি তোলেন, নিশ্চিত হতে হবে যে যে শিশুটি সঠিকভাবে বসতে পারে কি না। পাশাপাশি শিশুর জন্য মানানসই হেলমেট পরানো বাধ্যতামূলক।
এছাড়াও বাইকের পেছনে শিশুদের জন্য নিরাপদ সিট বা গ্রিপ থাকা উচিত। যেন শিশুটি সিটে স্থিরভাবে বসে থাকতে পারে। পাশাপাশি হাত-পা বাইকের বাইরে না যায় ও ভালোভাবে ধরে রাখে সে বিষয়েও সতর্ক থাকতে হবে।
বাইকের গতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, যেমন- গতিসীমা ৩০–৪০ কিমি/ঘণ্টার মধ্যে রাখা উচিত। ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তা এড়িয়ে চলা এবং ট্র্যাফিক নিয়ম মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি। দীর্ঘপথ ভ্রমণে পর্যাপ্ত বিরতি নেওয়াও গুরুত্বপূর্ণ। শিশুর আরাম ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই আনন্দময় ভ্রমণ সম্ভব। তাছাড়াও অভিভাবক হিসেবে সচেতন থাকলেই শিশুদের সঙ্গে বাইক ভ্রমণ হতে পারে নিরাপদ ও আনন্দদায়ক।
সব মিলিয়ে শিশু নিয়ে বাইকে উঠলে তা যেন নিরাপদ হয়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করা অভিভাবকের দায়িত্ব। সচেতনতা, সঠিক সরঞ্জাম এবং গতি নিয়ন্ত্রণই পারে এ ধরনের ঝুঁকি থেকে শিশুকে সুরক্ষিত রাখতে।
এমবি/ডিএ