রাবিতে হল বন্ধ রেখেই স্থগিত পরীক্ষা নেওয়ার দাবি

হল বন্ধ রেখেই স্থগিত পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে স্থগিত পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারীরা বেশিরভাগই বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের শিক্ষার্থী। তারা নিজেদের সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক দাবি করে বলেন, আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক কেউ নেই। কেউ কোনো রাজনৈতিক দলের হয়ে থাকলে প্লিজ বের হয়ে যান। আমরা হল ও ক্যাম্পাস খোলার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি। কিন্তু যে পরীক্ষাগুলো চলছিল সেগুলো যেন আবার চালু করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ইমতিশান বলেন, আমরা এখানে শুধুমাত্র পরীক্ষাগুলো নেওয়ার দাবি জানাতে এসেছি। যতদিন দাবি মেনে নেওয়া না হবে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। ২০১৯ সালে যাদের অনার্স-মাস্টার্স শেষ বর্ষের পরীক্ষায় বসার কথা ছিল তাদের পরীক্ষাগুলো চলছিল। পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমরা বিপদে পড়ে গেলাম।
একই বিভাগের শিক্ষার্থী তমালিকা পিংকি বলেন, পরীক্ষাগুলো শুরু হওয়াতে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খোলা না থাকায় মেসে উঠতে হয়েছে। করোনায় যেখানে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আমাদের পরিবার দিশেহারা, সেসময় এসে আমরা পরীক্ষা দিতে বসেছিলাম। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রীর সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীরা আবারও অনিশ্চয়তা পড়ে গেল।
এ সময় শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করতে দেখা গেছে। সেখানে, ‘বাঁচার মতো বাঁচতে চাই, আমাদের অধিকার ফেরত চাই’, ‘তিন বছর একবর্ষে থাকবো না, থাকবো না’, ‘২০১৯ এর সকল পরীক্ষা চালু চাই, করতে হবে’ ইত্যাদি লেখা ছিল। মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেন। আন্দোলনে শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবিই আমাদের দাবি। আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি যেন পরীক্ষাগুলো পুনরায় চালু করে দেয়া যায়।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে গত বছরের মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে আটকে যায় অনার্স-মাস্টার্সের শেষ বর্ষের পরীক্ষা। পরে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে হল না খুলেই পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু বরিশাল ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় দেশব্যাপী আন্দোলনের মুখে শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণায় চালু থাকা পরীক্ষাগুলোও বন্ধ হয়ে যায়।
মেশকাত মিশু/আরএআর