ছাত্রলীগ নেতার মারধর
‘ফুটবলের মতো আমার মুখের দুইপাশে অনবরত লাথি মেরেছে তারা’

কুষ্টিয়া-খুলনা রুটে চলাচলকারী গড়াই পরিবহনের একটি বাসের ড্রাইভার ও সুপারভাইজারকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি বনি আমিনসহ ৪/৫ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে প্রায় দেড় ঘণ্টা কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন বিক্ষুব্ধ বাস শ্রমিকরা। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজটের। ফলে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রী ও পথচারীরা। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (৩১ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে মারধরের ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, কুষ্টিয়া থেকে বাসে আসছিলেন শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি বনি আমিন। বাসে সিটে বসা নিয়ে বাসের চালক ও সুপারভাইজারের সাথে কথা কাটাকাটি হয় তার। এরপর বাস বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেটের সামনে পৌঁছালে বনি আরও চারজনকে ডেকে তাদের মারধর করেছেন।
বাসচালক তোফাজ্জল হোসেন সবুজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, বাস ক্যাম্পাস গেটের সামনে পৌঁছালে বনিসহ চার-পাঁচজন বন্ধু মিলে তাকে, গাড়ির সুপারভাইজার ও হেলপারকে মারধর করেন।
সবুজ বলেন, সবাই মিলে আমাকে গরু মারার মতো মারল। ফুটবলের মতো আমার মুখের দুইপাশে অনবরত লাথি মেরেছে তারা। শুরুতে দুই তিন বার বাটাম দিয়ে যেভাবে মেরেছিল, আমি যদি হাত দিয়ে না আটকাতাম তাহলে আমি সেখানেই মারা যেতাম।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি বনি আমিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কারা কারা ছিল, উনাকে মারধর করেছে এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আর উনার সাথে তো আমার কোনো শত্রুতাও নেই।
আরেক অভিযুক্ত লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী জামিলের কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দুপুরে ওই সময় আমি সেখানে ছিলাম না। আমি ক্লাসে ছিলাম। এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।
এদিকে দোষীদের অতি দ্রুত শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনতে ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ভুক্তভোগী যারা রয়েছেন আমরা তাদের নিয়ে আলোচনায় বসেছিলাম। তাদের অভিযোগ শুনেছি। তারা মারধরকারী ৪/৫ জন ছিল বলেছে। এর মধ্যে দুইজনের নাম বলেছে। আমরা প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করতে এবং তাদের অপরাধের মাত্রা নির্ধারণ করতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
রাকিব হোসেন/এনএফ