ওসমান হাদির উপর আক্রমণের প্রতিবাদে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ

ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে দেশের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পৃথক বিক্ষোভ কর্মসূচিতে হামলার নিন্দা জানিয়ে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টায় জাবি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে মুরাদ চত্বরে পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। মিছিলে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন- হাদির উপর হামলা কেনো, ইন্টেরিম জবাব দে, বান-চালের ষড়যন্ত্র মানিনা মানব না।
মিছিল শেষে জাবি ছাত্রদলের সেক্রেটারি ওয়াসিম আহমেদ অনিক বলেন, নির্বাচনের প্রাক্কালে হাদীর ওপর আক্রমণ একটি পরিকল্পিত সন্ত্রাসী তৎপরতা। তিনি ইন্টেরিম সরকারের প্রতি তফসিল অনুযায়ী সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেওয়ার দাবি জানান।
আহবায়ক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর বলেন, এ হামলা শুধু হাদীর ওপর নয়- জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সব কর্মীর ওপর হামলা। তিনি হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচার নিশ্চিতের আহ্বান জানান।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)
একই দিনে বিকেল সাড়ে ৪টায় রাবি শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে তালাইমারিতে সমাবেশ করেন। মিছিলে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন- হাদীর ওপর হামলা কেন, ইন্টেরিম জবাব চাই, জুলাইয়ের অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন, সন্ত্রাসীদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও।
সমাবেশে রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, তফসিল ঘোষণার পরদিনই স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওপর হামলা নির্বাচনের জন্য ভয়ংকর বার্তা।
রাবি ছাত্রশিবিরের নেতারা অভিযোগ করেন, হাদির ওপর হামলার পেছনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও টেন্ডারবাজ চক্রের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। রাকসু ভিপি মোস্তাকুর রহমান বলেন, গুলি করে কখনো বিপ্লবীদের থামানো যাবে না।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)
চবিতে বিকেল ৫টায় জিরো পয়েন্ট থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে শাহজালাল হল ও সোহরাওয়ার্দী মোড় ঘুরে পুনরায় জিরো পয়েন্টে এসে শেষ হয়।
মিছিলে স্লোগান ওঠে- আমরা সবাই হাদি হব, গুলির মুখে কথা কব, হাদি ভাইয়ের কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট একশন।
চাকসুর জিএস সাঈদ বিন হাবিব বলেন, নির্বাচন বানচাল করার জন্যই এ হামলা। চাকসু ভিপি ইব্রাহিম রনি অভিযোগ করেন, হামলার সঙ্গে প্রশাসনের একটি অংশ জড়িত থাকতে পারে, দ্রুত গ্রেপ্তার না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন।
মাগরিবের নামাজের পর হাদির সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি)
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নোবিপ্রবি শহীদ মিনার থেকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন- তুমি কে, আমি কে? হাদি হাদি, গুলির মুখে কথা কইবো, আমরা সবাই হাদি হবো, হাদি ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেবো না। সমাবেশে শিক্ষার্থীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের আল্টিমেটাম দেন।
সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জিহাদুল বলেন, হাদি ভাই একা নন, আমরা সবাই হাদি।
জুলাই আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থী জাফর বলেন, ওসমান হাদি মানেই বাংলাদেশ।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রধান ফটকসংলগ্ন কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়কে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা হাদির সুস্থতার জন্য দোয়া-মোনাজাত করেন।
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন- হাদী ভাই, আহত কেন, ইন্টেরিম জবাব চাই, ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ, গুলিবিদ্ধ হাদী ভাই, ঘরে থাকার সময় নাই, আমার সোনার বাংলায়, সন্ত্রাসীদের ঠাঁই নাই, জুলাইয়ের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার, দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা, দল শিবির জনতা, গড়ে তোল একতা, জামাত-বিএনপি জনতা, গড়ে তোল একতা, ওসমান হাদীর কারণে, ভয় করি না মরনে, লীগ ধর জেলে ভর, সন্ত্রাসীরা দেখে যা, রাজপথে তোর বাপেরা, হাদী ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেবো নাসহ আরও বিভিন্ন স্লোগান।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার আহ্বায়ক এস. এম. সুইট, শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ইউসুফ আলী, শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ, আইইউসানসের সাবেক সভাপতি সাজ্জাদুল্লাহ শেখ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখা সভাপতি ইসমাইল হোসেন রাহাতসহ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
এআরবি
