না চেয়েও ঢাবি ছাত্রদলের কমিটিতে, ব্যাখ্যা জানার আগেই অব্যাহতি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সদ্য ঘোষিত ১৮টি হলের ছাত্রদল কমিটিতে নিজের অজান্তেই ‘আহ্বায়ক সদস্য’ হয়ে গিয়েছিলেন হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের শিক্ষার্থী এন এস সায়মন। কিন্তু তিনি জানতেনই না কমিটিতে তার পদ আসার বিষয়ে। আবার উপযুক্ত ব্যাখ্যা জানার আগেই কমিটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে তাকে।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) কমিটি ঘোষণার পর নিজের নাম দেখে অবাক হন তিনি। এক ফেসবুক পোস্টে সায়মন বিস্ময় প্রকাশ করে জানান, তিনি কখনো ছাত্রদল বা অন্য কোনো প্রচলিত ছাত্ররাজনীতিতে যুক্ত হননি, হবেও না।
তিনি বলেন, ‘আমি ছাত্রসংসদ কেন্দ্রিক ছাত্ররাজনীতিতে বিশ্বাসী। অথচ এখন আমার অনুমতি ব্যতীত আমার নাম রাজনৈতিক পদে থাকায় আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।’
সায়মন অভিযোগ করে বলেন, ‘যে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এটি করা হয়েছে সেটি তার জন্য অপমানজনক। যেখানে তথ্য গোপনের মতো গুরুতর অপরাধের সঙ্গে তার নাম একই বিজ্ঞপ্তিতে জড়ানো হয়েছে। যারা তার ঘটনা বিস্তারিত জানেন না, তারা এতে তার প্রতি অনেক নেতিবাচক ধারণা পোষণ করতে পারে।’
তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘ভবিষ্যতে যদি এই বিষয়কে কেন্দ্র করে আমার ওপর কোনো চাপ সৃষ্টি করা হয়, বা আমার পরিবার এ কারণে কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় – তার দায় কে নেবে, আমি জানি না। বর্তমানে কেউই নিরাপদ না, কারণ কেউ চাইলেই কারো ফেসবুক আইডির নাম ব্যবহার করে কমিটিতে নাম দিতে পারে। এতে আমার নিরাপত্তা, মানসিক শান্তি এবং পারিবারিক স্থিতি বিঘ্নিত হয়েছে যার কারণে আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার পরিবার থেকে দলীয় রাজনীতি করার বিষয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আছে। আমিও চাই, খেলাধুলা এবং একটি সুস্থ জীবনধারা বজায় রেখে চলতে, লেজুড়ভিত্তিক রাজনীতি নয়।’
ছাত্রদলের কাছে দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ছাত্রদলের প্রতি আমার আকাঙ্ক্ষা থাকবে, তারা আমার জন্য আলাদা করে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবেন, যাতে ক্যাম্পাসে আমার ভাবমূর্তি বজায় থাকে।’
এ বিষয়ে ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস ও সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তারা কল ধরেননি।
উল্লেখ্য, গত ৯ আগস্ট কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়।
গত ৮ আগস্টের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের অধীনে ১৮টি হলের প্রকাশিত কমিটি থেকে ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হল কমিটির আহ্বান ক মোসাদ্দেক আল হক শান্ত ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিবুল হাসান সৌরভ, শামসুন নাহার হল কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নিতু রানী সাহা, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক রাজু শেখ এবং হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল কমিটির সদস্য আহমেদ জাবির মাহাম ও এন এস সায়মনের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার কথা জানিয়ে সাংগঠনিক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়।
এসএআর/এমএন