মনোনয়ন জমাদানের শেষ দিনে লাপাত্তা নির্বাচন কমিশন, ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (ব্রাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন জমাদানের শেষ দিন ছিল ৯ ডিসেম্বর। কিন্তু আজ নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন কমিশনের কোনো সদস্যই কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন না, এমনকি তাদের কাউকে খুঁজেও পাওয়া যায়নি। তফসিল অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মনোনয়ন জমা নেওয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকেই নির্বাচন কমিশনের কার্যালয় বন্ধ ছিল। এতে শেষ মুহূর্তে মনোনয়ন দিতে আসা প্রার্থীরা পড়েন চরম বিড়ম্বনা ও অনিশ্চয়তায়।
সকালের পর থেকেই কমিশন কার্যালয়ের সামনে বিভিন্ন পদের প্রার্থী ও সমর্থকদের ভিড় বাড়তে থাকে। কিন্তু দুপুর পেরিয়ে গেলেও কোনো নির্বাচনী দায়িত্বশীলকে না পেয়ে তারা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ- এটি ইচ্ছাকৃত উদাসীনতা, যা পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়াকেই প্রশ্নের মুখে ফেলছে। মনোনয়নের শেষ দিনে কমিশনের এমন অনুপস্থিতি নির্বাচনকে স্বচ্ছ করার ক্ষেত্রে প্রশাসনের বড় ব্যর্থতার ইঙ্গিত দেয়। এতে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে প্রার্থীদের মধ্যে।
মনোনয়ন জমা দিতে এসে প্রার্থী মো. শিবলী সাদিক বলেন, সকাল থেকে অপেক্ষা করছি, কিন্তু নির্বাচন কমিশনের কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। মনোনয়নের শেষ দিনে এমন অনুপস্থিতি বড় ধরনের প্রশাসনিক ব্যর্থতা, এতে পুরো নির্বাচনব্যবস্থা দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
মনোনয়ন জমা দিতে আসা একই প্রার্থী মো. শিবলী সাদিক আরও বলেন, সকাল থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে কার্যালয়ে এসে দেখি কেউই নেই। শেষ দিনে কমিশন অনুপস্থিত থাকা একটি গুরুতর প্রশাসনিক ব্যর্থতা, যা পুরো নির্বাচন কাঠামোকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে।
ভিপি পদপ্রার্থী আহমাদুল হক আলবীর বলেন, মনোনয়ন দিতে এসে দেখি অফিসই বন্ধ। আজ শেষ দিন জেনেও সকাল থেকে বসে আছি, কিন্তু কমিশনের কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। এতে আমাদের অধিকার স্পষ্টতই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী বলেন, নির্বাচন কমিশনাররা মনোনয়ন নিচ্ছেন না বা অফিসে নেই এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। সঠিক তথ্য জানতে হলে কমিশনারদের সঙ্গে কথা বলতে হবে।
কিন্তু নির্বাচন কমিশনের একাধিক সদস্যের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
মনোনয়ন জমার শেষ দিনে কমিশনের এমন রহস্যজনক অনুপস্থিতি নিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ ক্রমেই বাড়ছে। তাদের অনেকের আশঙ্কা, এই আচরণ সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশকে গভীর সংকটে ফেলতে পারে।
প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশনের ৩ ডিসেম্বর ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিল (ডোপ টেস্টের রিপোর্টসহ), ১০ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র বাছাই ও প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ, ১১ ডিসেম্বর আপত্তি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি এবং ২৪ ডিসেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
এআরবি