লঞ্চে কার্গোর ধাক্কা, রক্ষা পেলেন ২ শতাধিক যাত্রী

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে তেলবাহী অটি সাংহাই কার্গোর সঙ্গে যাত্রীবাহী লঞ্চের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অল্পের জন্য রক্ষা পেল লঞ্চের দুই শতাধিক যাত্রী। শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার সময় ঘটনাটি ঘটে।
জানা যায়, পাটুরিয়া ঘাট থেকে ২ শতাধিক যাত্রী নিয়ে এম ভি ফ্লাইংবার্ড-২ দৌলতদিয়া ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে আসলে চট্রগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা নটাখোলা পাবনাগামী ফার্নেস ওয়েল ভরা কার্গো লঞ্চের বাম পাশে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ধাক্কা লাগার সঙ্গে সঙ্গে লঞ্চের উপরে থাকা ৬ থেকে ৭ জন পানিতে পড়ে যায় এবং ভয়ে আরও কমপক্ষে ৪০ জন যাত্রী পানিতে লাফিয়ে পড়ে।
দুর্ঘটনার কাছে অবস্থান করা কেরামত আলী ফেরি পানিতে পড়া যাত্রীদের উদ্ধার করে এবং কিছু যাত্রী ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে উঠে পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়ার পাড়ে আসে। পানিতে পড়া সবাইকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। ধাক্কায় লঞ্চের কিছু ক্ষতি হলেও কয়েকজন যাত্রী আহত হয়।
(এম ভি ফ্লাইংবার্ড-২) এর লঞ্চ মাস্টার আবুল হোসেন (৬০) বলেন, পাটুরিয়া থেকে ছেড়ে আমি লঞ্চ নিয়ে প্রায় নদীর তিন ভাগ চলে আসি, এ সময় দেখতে পাই দুইটি ওয়েল ট্যাংকার পাল্লা দিয়ে আসছে। আমি লঞ্চ দ্রুত ব্রেক করে পেছনে নেওয়ার চেষ্টা করলেও ওয়েল ট্যাংকারটি আমার লঞ্চের মাঝামাঝি এসে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে কিছু যাত্রী ভয়ে লঞ্চ থেকে লাভ দিয়ে নদীতে ঝাঁপ দেয়। লঞ্চটির সামান্য ক্ষতি হলেও যাত্রীদের কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। নদীতে ঝাঁপ দেওয়া যাত্রীদের জীবিত উদ্ধার করা হয়।
বিআইডব্লিউটিএ’র দৌলতদিয়া ঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আফতাব উদ্দিন বলেন, দ্রুত গতিতে পাল্লা দিয়ে ওয়েল ট্যাংকার চলার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে। অল্পের জন্য ১৬৭ জন যাত্রীবোঝাই লঞ্চটি রক্ষা পেয়েছে।
এদিকে লঞ্চে থাকা যাত্রী সেনাবাহিনীতে কর্মরত হারুনুর রশিদ বলেন, লঞ্চটি পাটুরিয়া থেকে দৌলতদিয়া ঘাটের কাছাকাছি আসতেই তেলবাহী কার্গোটি লঞ্চের বাম পাশের মাঝখানে ধাক্কা দেয়। এতে আমিসহ কিছু লোক ধাক্কা লেগে নদীতে পড়ে যাই এবং ৩০ থেকে ৪০ জন যাত্রী পানিতে ঝাঁপ দেয়।
কেরামত আলী ফেরিতে থাকা পপকন ব্যাবসায়ী রেজাউল করিম (৩৮) বলেন, আমি দেখতে পাই পর পর ২টি তেলবাহী কার্গো পাল্লা দিয়ে যাচ্ছিল। দৌলতদিয়ার দিকে যাওয়ার সময় লঞ্চের মাঝ বারাবর কার্গোটি ধাক্কা দেয়। ধাক্কা লাগার পর কিছু যাত্রী নদীতে পড়ে যায় এবং আরও কিছু যাত্রী ভয়ে নদীতে ঝাঁপ দেয়। তাৎক্ষণিক আমি দেখে দুপুর ১২টার সময় ৯৯৯ ফোন দেই। তারপর ফায়ার সার্ভিসের লোক কিছুক্ষণ পরে ঘটনাস্থলে আসে। তবে লঞ্চে ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশী যাত্রী ছিল।
মীর সামসুজ্জামান/এমএসআর