থানা ঘেরাও করে কাদের মির্জার ধর্মঘট

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ থানা ঘেরাও করে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেছেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার এবং চরকাঁকড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা ফখরুল ইসলাম সবুজকে গ্রেপ্তার দাবিতে মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টায় তিনি এ কর্মসূচি শুরু করেন।
রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত কয়েকশ নেতাকর্মী নিয়ে থানার ফটকে অবস্থান করেন কাদের মির্জা। বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৭টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কাদের মির্জা বাড়ি ফিরলেও তার সমর্থকরা সেখানে অবস্থান নিয়ে থানা অবরুদ্ধ করে রেখেছেন।
কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. রুবেল মিয়া ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আবদুল কাদের মির্জা ফেনীর দাগনভূঁইয়া ও চট্টগ্রামে তার ওপর হামলা ও হত্যার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বসুরহাট রূপালী চত্বরে সংবাদ সম্মেলন করেন। যাতে তিনি ফেনীর সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, নোয়াখালীর সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীসহ দাগনভূঁইয়া ও সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে অভিযুক্ত করেন।
সংবাদ সম্মেলন চলাকালে উপজেলার টেকের বাজারে আবদুল কাদের মির্জার বিরুদ্ধে একটি সমাবেশ করেন চরকাঁকড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা ফখরুল ইসলাম। কাদের মির্জা কোম্পানীগঞ্জকে জিম্মি করে রেখেছেন উল্লেখ করে তিনি বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। সমাবেশ শেষে সেখানে একটি বিক্ষোভ মিছিল হয়।
সমাবেশের খবরে কাদের মির্জার একদল সমর্থক টেকের বাজারে যান। সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে থানা থেকে পুলিশ গিয়ে ফখরুল ইসলামকে আটক করেন। এ সময় সমর্থকরা পুলিশের কাছ থেকে ফখরুলকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। এ ঘটনার প্রতিবাদে কাদের মির্জা রাত সাড়ে ৮টার দিকে কয়েকশ নেতাকর্মী নিয়ে থানার সামনে অবস্থান নেন। সেখানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান, পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন ও কোম্পানীগঞ্জের ওসির প্রত্যাহারের দাবি জানান। পাশাপাশি সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী ও একরামুল করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। একই সঙ্গে দাবি আদায়ে বুধবার কোম্পানীগঞ্জে হরতালের ডাক দেন।
এদিকে বুধবার সকালে কর্মসূচির বিষয়ে জানতে কাদের মির্জার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেননি। একপর্যায়ে তার সহকারী সিরাজুল ইসলাম ফোন ধরে ঢাকা পোস্টকে বলেন, নেতা ঘুমিয়ে আছেন। এখন কথা বলতে পারবেন না।
এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হককে একাধিকার ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।
সকালে থানায় কর্তব্যরত সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. রুবেল মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাত সাড়ে ৮টা থেকে মেয়র লোকজন নিয়ে থানার ফটকে অবস্থান করেন। এখনও তার সমর্থকরা থানার সামনেই অবস্থান করছেন। এতে থানা থেকে কেউ বের হতে পারছেন না। আবার বাইরের কেউ থানায় ঢুকতে পারছেন না। থানার পুলিশ অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।
হাসিব আল আমিন/আরএআর