এসএসসি পরীক্ষার্থী বোনকে যেভাবে ডুবে যাওয়া থেকে বাঁচাল ছোট ভাই

Dhaka Post Desk

এম এ সামাদ, পঞ্চগড় থেকে

২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৯:৪৫ এএম


এসএসসি পরীক্ষার্থী বোনকে যেভাবে ডুবে যাওয়া থেকে বাঁচাল ছোট ভাই

ঈশিতা ও তর্পণ ভাই-বোন। এক মাস আগে থেকেই তারা পরিকল্পনা করে আসছিল নদীর অপর পাড়ে মহালয়া দেখতে যাবে। মহালয়া উপলক্ষে কেনে নতুন জামা-কাপড়। রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরের আগেই আউলিয়া ঘাটে চলে যায় তারা। ঘাটে তখন অনেক লোক। সব উপেক্ষা করে ঘাটে নৌকা আসতেই ওঠে যায় তারা। ওঠার পর কিছুদূর যেতেই নৌকায় পানি উঠতে শুরু করে। ঘাট থেকে ৫০০ গজ যাওয়ার পর ডুবে যায় নৌকাটি। ডুবতে থাকে যাত্রীরাও। বাদ পড়েনি ঈশিতা ও তর্পণও। পানিতে ডুবে থাকতে দেখে সাঁতরে গিয়ে বড় বোনকে উদ্ধার করে তর্পণ। 

বড় বোনের প্রতি এমন দুঃসাহসিক ভালোবাসা সাড়া ফেলেছে ভাই-বোনের মধুর সম্পর্কে। ছোট ভাইয়ের প্রতি ভালোবাসা আরও বেড়েছে বোন ঈশিতার। 

ঈশিতা ও তর্পণ মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের সরদারপাড়া গ্রামের কৈলাশ ও সুচিত্রা দম্পতির সন্তান। তারা দুজনে মাড়ে উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ঈশিতা এবার চলমান এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে আর তর্পণ ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। 

ঈশিতা জানায়, নৌকাটিতে অনেক লোকজন ছিল। পুরো নৌকায় লোকজন। কোনো ফাঁকা জায়গা ছিল না। ছাড়ার পর আস্তে আস্তে ওপরে পানি উঠা শুরু করে। আর মাঝখানে গিয়ে ডুবে যায়। আমি সাঁতার জানতাম। তবে আমার ওড়নায় পা দুটো আটকে যাওয়ায় ডুবছি আর উঠছি। কিছুক্ষণ পর ছোট ভাই গিয়ে আমাকে একটা নৌকার কাছে নিয়ে যায়। নৌকাটাতে ওঠার পর আর জ্ঞান ছিল না। পরে বোদা হাসপাতালে গিয়ে জ্ঞান ফিরছে। 

ভাই তর্পণ জানায়, নৌকা ডুবে যাওয়ার পর আমি সাঁতার কাটতে থাকি। পাশে আমার বড় বোন হাবুডুবু খাচ্ছিল। আমি সাঁতরে তার কাছে যাই। বোনের একটা হাত ধরে তাকে নিয়ে সাঁতরাতে থাকি। পরে একটা নৌকা আসলে সেটাতে করে ঘাটে আসি। আমার বোনকে বাঁচাতে পেরেছি এটাই অনেক বড় কথা। 

ভয়াবহ নৌকাডুবিতে এখন পর্যন্ত ৬৮ জনের লাশ উদ্ধার করে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আর নিখোঁজদের উদ্ধার অভিযান চলমান রয়েছে। এ ঘটনায় নিহতদের পরিবারের মাঝে ২০ হাজার টাকা করে অনুদান ও আহতদের চিকিৎসা খরচ বহন করছে জেলা প্রশাসন। 

এসপি

টাইমলাইন

Link copied