বিপথগামী ছিলেন পুলিশ সদস্য সাদ্দাম!

ময়মনসিংহে পুলিশ সদস্য সাদ্দাম হোসেন (২৭) হত্যার ঘটনার দুই দিনের মাথায় রহস্য উদঘাটন করেছে থানা পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত সাদ্দামের সহোদর বড় ভাইসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশের ভাষ্য, বিপথগামী ছিলেন পুলিশ সদস্য সাদ্দাম। ছিলেন গাঁজা, হেরোইনসহ বিভিন্ন মাদকে আসক্ত। তার ওপর অতিষ্ট ছিল পরিবার। মাদকের টাকার জন্য পরিবারের লোকজনদের বিরক্ত করার কারণেই বড় ভাইয়ের হাতে খুন হয় সাদ্দাম।
সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কোতোয়ালি মডেল থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. শাহীনুল ইসলাম ফকির।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, নিহতের বড় ভাই হাবিবুল করিম তপু (৪০) ও মুক্তাগাছা মালতিপুর এলাকার মৃত আব্দুস সালামের ছেলে আনোয়ারুল ইসলাম (৩৩)।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহীনুল ইসলাম ফকির বলেন, সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশে কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত ছিল সাদ্দাম। সে প্রায় সময় চাকরির কর্মস্থল থেকে ছুটি ছাড়াই নিজ বাড়ি ময়মনসিংহ সদরের নিজকল্পা এলাকায় অবস্থান করতো। এজন্য তাকে বেশ কয়েকটি লঘু এবং গুরুদন্ডে দন্ডিত করেছে পুলিশ বিভাগ। মাদকাসক্ত থাকায় সাদ্দাম বিভিন্ন সময় টাকার জন্য বাবা-মা ও ভাইকে বিরক্ত করতো। ঘটনার দিন ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টাকার জন্য সাদ্দাম তার বাবা-মাকে লাঞ্ছিত করে। এ খবর পেয়ে তার বড় ভাই হাবিবুল করিম তপু ক্ষুব্ধ এবং ঢাকা থেকে বাড়িতে চলে আসে। পরবর্তীতে তপু তার ভাইকে হত্যার পরিকল্পনা করে। সেই মোতাবেক তার বন্ধু আনোয়ারকে খবর দিয়ে নিয়ে আসে। ওইদিন রাত ১১টার দিকে স্থানীয় মেহগনি বাগানে তপু, আনোয়ারসহ তিনজন অবস্থান নিয়ে সাদ্দামকে ফোন করে ডেকে নিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, সাদ্দাম কেন তার বাবা-মাকে লাঞ্ছিত করেছে এবং কর্মস্থলে কেন যায় না, এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সাদ্দামের গলায় রশি দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে গাছের সঙ্গে আটকিয়ে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে চলে যায়।
ঘটনার পরদিন বিকেলে ওই বাগান থেকে সাদ্দামের মরদেহ উদ্ধারের পর রাতে নিহতের স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এ নিয়ে তদন্তে নামলে হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয় পুলিশ। পরে রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে ঢাকা থেকে সাদ্দামের বড় ভাই তপু এবং মুক্তাগাছা থেকে আনোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যায় জড়িত অপর আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
উবায়দুল হক/এমএএস