‘ভোট ডাকাতির কথা ভাবলে সেতু দিয়ে পদ্মা পার হতে পারবেন না’

ফরিদপুরের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন বলেছেন, ‘আগামী নির্বাচনে আমি হ্যাট্রিক করবো। এ এলাকায় আগামীতে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। আমার এলাকায় ভোট ডাকাতির কথা ভাববেন না। ভোট ডাকাতি করার চিন্তা করলে পদ্মা সেতু দিয়া না, সাঁতরাইয়া পদ্মা নদী পার হতে হবে।’

শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার নূরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়নের বাইশ রশি শিব সুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ আলী মীর ও সাবেক সংরক্ষিত মহিলা সদস্য রাজীয়া সুলতানার নিক্সন শিবিরে যোগদান উপলক্ষে আয়োজিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন নিক্সন। সেখানেই ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী জাফরউল্ল্যকে উদ্দেশ্য করে এসব কথা বলেন তিনি।

ফরিদপুরের ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রান উপজেলা নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-৪ আসনের বর্তমান স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরী কেন্দ্রীয় আওয়ামী যুবলীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য। অপরদিকে ওই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কাজী জাফরউল্ল্যা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য।

২০১৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিক্সন চৌধুরী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কাজী জাফরউল্ল্যাকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর থেকে ওই তিন উপজেলা আওয়ামী লীগ দুই নেতার নেতৃত্বে বিভক্ত হয়ে পড়ে। গত ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ প্রার্থী কাজী জাফরউল্ল্যা পরাজিত হন স্বতন্ত্র প্রার্থী নিক্সন চৌধুরীর কাছে।

নিক্সন চৌধুরী বলেন, আপনি (জাফরউল্ল্যা) কোন মুখে ভোট চান। মানুষের বিপদের সময় তাদের পাশে থাকেন না। এখন নির্বাচনের আগে এলাকায় এসেছেন। আপনি শুধু আপনাকে, আপনার পরিবারকে এবং পানামার (পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারি) টাকাকে ভালোবাসেন।

ভোট ডাকাতি করতে এলে জনগণ দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেবে মন্তব্য করে নিক্সন চৌধুরী বলেন, মোটেও বেফাঁস কথা বলবেন না। দেশের মানুষ চায় আমি নৌকা প্রতীক পাই। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে নমিনেশন চাইব। যদি নমিনেশন পাই তাহলে সারা দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে এই আসন শেখ হাসিনাকে উপহার দেব।

নিক্সন বলেন, কাজী জাফরউল্ল্যার লোকজন এমন ভাবে কথা বলছেন তাতে মনে হচ্ছে তিনি এমপি হয়ে গেছেন। ওনাকে ওরা এমপি বানায় ফেলছে। উনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি নির্বাচনের আগে এমপি হয়ে গেছেন।

নিক্সন চৌধুরী বলেন, আপনার চাচা ও বাবা এ এলাকায় অনেক উন্নয়ন করে গেছেন। এজন্য তাদের স্যালুট জানাই। পাশাপাশি কোনো কাজ না করার জন্য আপনাকে ধিক্কার জানাই। আপনি দেশের ২০ জন ধনীর মধ্যে একজন। আপনি একটি ব্যাংকের মালিক। অনেক ব্যবসার সাথে আপনি জড়িত অথচ এই তিন উপজেলার একটা ছেলেকেও আপনি চাকরি দেন নাই।

সমর্থকদের উদ্দেশ্যে নিক্সন বলেন, অপনারা নিজেদের মধ্যে দলাদলি করবেন না, মারামারি করবেন না। এ এলাকার লোক শান্তি চায়। আপনারা এক সাথে মিলেমিশে থাকেন। যদি কেউ মারামারি করতে চান তাহলে তাকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

শুক্রবার আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন নূরুল্লাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ শাহীন আলম। সভা পরিচালনা করেন একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাহাদাত হোসেন, ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, সদরপুর উপজেলা পরিষদের চেযারম্যান কাজী শফিকুর রহমান প্রমুখ।

জহির হোসেন/টিএম