নারায়ণগঞ্জে গৃহবধূ হত্যায় দুইজনের যাবজ্জীবন

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে নূর বানু (৬০) নামের এক গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যার মামলায় দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদেরকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
সোমবার (২০ জুন) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন আসামিদের উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন।
আদালতের সরকারি কৌসুঁলি মো. মনিরুজ্জামান বুলবুল ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- রূপগঞ্জের গন্ধবপুর এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে কামরুজ্জামান ওরফে কামু (৪০) ও একই এলাকার মৃত নূরু মিয়ার ছেলে রুবেল হোসেন (৩৪)।
কৌসুঁলি মো. মনিরুজ্জামান বলেন, এই মামলায় আসামিদের মধ্যে একজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালত এই মামলায় মোট ১৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শেষে এই রায় দিয়েছেন।
এদিকে আদালতের রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী ও নিহতের স্বজনরা। নিহতের ছেলে ইলিয়াস মিয়া রায়ের বিষয়ে তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, ঘটনার পর আমি জাহাঙ্গীরসহ অজ্ঞাত আরও ৫-৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করি। এরপর জাহাঙ্গীর ও তার দুই সহযোগী (কামরুজ্জামান ওরফে কামু ও রুবেল হোসেন) গ্রেপ্তার হন। জাহাঙ্গীর জামিনে বের হওয়ার কিছু দিন পর মারা যান। তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে বাদ দিয়ে অপর দুই আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
তিনি আরও বলেন, আসামি কামরুজ্জামান কামু আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়া সব সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত। সব কিছু অনুকূলে থাকার পরও কেন আদালত তাদের ফাঁসির রায় না দিয়ে যাবজ্জীবন দিলেন তা আমার বোধগম্য নয়। আমি ও আমার পরিবার এই রায়ে সন্তুষ্ট নই। আমরা ন্যায়বিচার পেতে উচ্চ আদালতে আপিল করবো। আশা করি উচ্চ আদালতে গেলে আমরা ন্যায়বিচার পাব।
প্রসঙ্গত, দুই শতাংশ জমি নিয়ে নূর বানু ও তার প্রতিবেশীদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। তাদের বিরোধ নিষ্পত্তিতে স্থানীয়ভাবে বেশ কয়েকবার গ্রাম্য সালিশ হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় আসামি নূর বানুকে স্বপরিবারে হত্যার হুমকি দিতে থাকেন আসামিরা। পরে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৯ সালের ৩০ জুন নূর বানুকে করাত দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর, রুবেল ও তাদের সহযোগীরা।
আবির শিকদার/এমজেইউ