রাকিব হত্যায় শাওনসহ জড়িতদের গ্রেপ্তারে আল্টিমেটাম

ময়মনসিংহ নগরীর শম্ভুগঞ্জের চায়নামোড় টোলবক্স এলাকায় ট্রাকচালককে অহেতুক মারধরের প্রতিবাদ করতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে খুন হন স্থানীয় আব্দুর রাজ্জাক রাকিব (২৩) নামের এক যুবক। এ হত্যার ঘটনার তিন দিন পেরিয়ে গেলেও প্রধান আসামি বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা ইয়াছিন আরাফাত শাওন এবং তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এতে ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী। ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে হাজারো মানুষ।
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে টোলবক্স এলাকায় সড়কে প্রায় দুই ঘণ্টা অবস্থান করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী। কর্মসূচিতে নিহত রাকিবের তিন বছর বয়সী শিশু আহনাফ ইমতিয়াজ আয়ানও ছিল। ‘আমার বাবার হত্যার বিচার চাই’- এমন স্লোগান লেখা কাগজ ছিল শিশুটির হাতে। এ সময় স্থানীয় নেতৃবৃন্দ আসামিদের গ্রেপ্তারে আগামী ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে জানানো হয়, অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা না হলে ঘটনাস্থলে অবস্থান ধর্মঘটসহ কঠোর কর্মসূচির ডাক দেওয়া হবে।
নিহতের স্ত্রী দিলরুবা আক্তার বলেন, ‘ওরা আমার সন্তানকে এতিম করে দিয়েছে। আমাকে স্বামীহারা করেছে। ট্রাকচালককে মারধরের প্রতিবাদ করায় শাওন আমার স্বামীকে হত্যা করেছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্বামী হত্যার বিচার চাই।’
নিহতের মা হাসি বেগম মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে আহাজারি করতে করতে বলেন, ‘আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই।’
নিহতের চাচা ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক সাগর বলেন, ঘটনার পরপর পুলিশ অভিযুক্তদের ধরতে ২৪ ঘণ্টা সময় নিয়েছিল। কিন্তু এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি। সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমার ভাতিজাকে কেন হত্যা করা হয়েছে এর জবাব চাই। আমার ভাতিজার হত্যার বিচার চাই।

জেলা মটরযান শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার হোসেন চানু বলেন, দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার করা না হলে মোটরগাড়ি চলাচল অচল করে দেওয়া হবে।
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক মন্ডল বলেন, যেখানে রাকিবকে হত্যা করা হয়েছে সেই স্থানেই আমরা ধর্মঘট করবো। হত্যাকারীদের যেকোনো মূল্যে গ্রেপ্তার করতে হবে।
হত্যা মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনার পরপর একজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারেও চেষ্টা অব্যাহত আছে। যেখানেই থাকুক গ্রেপ্তার করা হবে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার (১১ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটের দিকে চায়নামোড় টোলবক্স এলাকায় ছুরিকাঘাতে আবদুর রাজ্জাক রাকিব নিহত হন। এ সময় আহত হন সাদেক আলী (৩০) ও শহীদ মিয়া (৪০) নামের আরও দুইজন। রাকিব ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের চরকালিবাড়ি গ্রামের মৃত উসমান গণির ছেলে।
এ ঘটনায় নিহতের মা হাসি বেগম বাদী হয়ে রোববার ইয়াসিন আরাফাত শাওনকে প্রধান আসামি করে আরও ১৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ১০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। এর আগে ঘটনাস্থল থেকে পালানোর সময় স্থানীয়রা মাজহারুল ইসলাম নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে। তবে চেষ্টা করেও শাওনকে আটকাতে গিয়ে ব্যর্থ হন এলাকাবাসী।
উবায়দুল হক/এমজেইউ