বগুড়ায় গরুর ‘র্যাম্প শো’

দেশের উত্তরের জেলা বগুড়ায় ছোট-বড় বিভিন্ন জাতের গরু নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে জমকালো ‘র্যাম্প শো’।
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে সদর উপজেলায় টিএমএসএস বিনোদন পার্কে ‘উত্তরবঙ্গ গরু মেলায়’ এ র্যাম্প শোর আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশ ডেইরি ফারমারস অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফএ) ব্যতিক্রমী দুদিনব্যাপী এই গরু মেলার আয়োজন করে। মেলা উপলক্ষ্যে শুক্রবার সকাল থেকেই বিভিন্ন জাতের গরু, ছাগল নিয়ে আসতে থাকেন খামারিরা।
পরে সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে বগুড়া-৬ (সদর) আসনের এমপি রাগেবুল আহসান রিপু ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ মেলাটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন।
মেলা ঘুরে দেখা যায়, আয়োজকরা ২১৬টি স্টল বসিয়েছেন। এসব স্টলে খামারিরা আমেরিকান ব্রাহামা, হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান, নর্থ বেঙ্গল গ্রে, শাহীওয়াল, ক্যাংকারাজ, ভুট্টীসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের গরু মেলায় দেখা গেছে। এছাড়া খামারিরা ছাগল, দুম্বা, নীল রবি জাতের মহিষ নিয়ে আনেন খামারিরা।
মেলায় ঘুরতে আসা শিবগঞ্জের দাড়িদহ এলাকার বাসিন্দা মো. ইমরান বলেন, এখানে বিভিন্ন জাতের বড় গরু দেখে ভালো লাগছে। তা ছাড়া উন্নত জাতের গরু-ছাগল পালন দেখে অনুপ্রাণিত হওয়া যায়। এসব লালন পালনে আগ্রহ বাড়লে তরুণ-যুবকরা ভুল পথে যাবে না। মেলায় আসলে এমন ধরনের অনুপ্রেরণা পাওয়া যায়।
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থেকে মেলায় অংশ নিয়েছেন মামা-ভাগ্নে এগ্রো ফার্মের মালিক সোহেল রানা। তিনি বলেন, মেলায় এসে যেটা হয়, কে কি রকম গরু পালে সেটা জানা যায়। কি রকম গরুর কি রকম গ্রোথ জানা যায়।

বর্তমান সময়ে গো খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় খামারিরা কিভাবে পরিচালনা করছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, খাবারের দাম বৃদ্ধিতে খামারিদের খুব সমস্যা হচ্ছে। আমাদের ঘাস পর্যাপ্ত থাকতে হবে। শুধু ফিডের ওপর নির্ভর করলে চলবে না। কাঁচা ঘাস, খড়, সাইলেজ করে খাওয়াতে হবে।
বগুড়ার এসএম এগ্রোর মালিক ও মেলার আয়োজকদের একজন রাহাত খান বলেন, সবাই কমবেশি গরু পালে। ঘরে ঘরে সুন্দর গরু আছে, কিন্তু একই প্লাটফরমে একসাথে এত গরু কখনও আসেনি। সবাইকে দেখার সুযোগ করে দেয়া মেলার আয়োজনের এটাও একটা উদ্দেশ্য। মেলায় আমার খামারের পালা আমেরিকান ব্রাহামা জাতের একটি ষাড় আনা হয়েছে। এটি এদেশের নয়, আমেরিকায় জন্ম নেয়া। এই জাতের গরুর গ্রোথ রেট অনেক ভালো। দেখতে সুন্দর, কুরবানির সময়ে এর চাহিদা ভালো পাওয়া যায়।
মেলার প্রধান সমন্বয়ক ও বিডিএফএ’র প্রেস সেক্রেটারি তৌহিদ পারভেজ বিপ্লব জানান, আমরা ইতোপূর্বে তিনটি জেলায় মেলা করেছি। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গের বগুড়ার মেলাটি সবচেয়ে বড়। এখানে গরু, ছাগল, মহিষ, দুম্বা ছাড়া কুকুর-বিড়াল, মুরগি আনা হয়েছে। আমাদের মেলার উদ্দেশ্য আশা করছি প্রান্তিক খামারিদের সাথে সৌখিন খামারির মেলবন্ধন করে দেওয়া।
মেলার সমন্বয়ক আরও জানান, শুক্রবার বিকেলে গরুর র্যাম্প শো হয়। শনিবার রাতে মেলায় আসা সব পশুদের জন্য ৭৫টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দেওয়া হবে।
মেলা পরিদর্শন শেষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ বলেন, আমেরিকান ব্রাহামা যদি সবাই চায়, তবে খারাপ কী। সেটার জন্য টেকনিক্যাল কমিটি আছে, তারা বিষয়টি দেখছে। আমাদের জলবায়ুতে, আবহাওয়ায় টিকে যায় তাহলে ভালো কথা। আমরা এ লক্ষ্যে কাজ করছি।
এমএসএ