কোট প্রাঙ্গণ থেকে আসামিকে অপহরণ করলেন বাদী!

পটুয়াখালী জেলা ও দায়রা জজ আদালত এলাকা থেকে এক মামলার আসামিকে অপহরণ করে ওই মামলার বাদী। কোট প্রাঙ্গণে সবার সামনে জোরপূর্বক ওই আসামিকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। এঘটনার একটি সিসি টিভি ফুটেজ ভাইরাল হয়েছে।
গত মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) রাতে ঘটনাটি গণমাধ্যমের সামনে আসে। অপহৃত ব্যক্তি গাজীপুরের কাপাসিয়া থানার গাওরার গ্রামের মৃত্যু আহাম্মদ ছালামের ছেলে মোস্তফা কামাল। চলতি বছর মোস্তফা কামালের সাবেক স্ত্রী নাসরিন তার বিরুদ্ধে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে একটি যৌতুক মামলা দায়ের করেন।
কোট প্রাঙ্গণ থেকে আসামিকে অপহরণের ঘটনার পর তাৎক্ষণিক তার পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান হাসিব লিখিত আকারে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারককে অবহিত করে। আদালত সঙ্গে সঙ্গে কোর্ট পুলিশ পরিদর্শকে উদ্ধারপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
সিসি টিভি ফুটেজে দেখা যায়, মোস্তফা কামাল নামে ওই ব্যক্তি হাজিরা শেষ করে ফেরার পথে পটুয়াখালী কোর্টের সামনে থেকে মামলার বাদী ও তার পূর্বের স্ত্রী নাসিমা আক্তারের নেতৃত্বে কিছু অজ্ঞাতনামা লোক জোরপূর্বক তাকে অটোতে উঠিয়ে নিয়ে যায়।
ভিকটিম মোস্তফা কামাল (মোস্তাফিজুর রহমান) বলেন, আমার বাড়ি গাজিপুর জেলায়। এখানের কাউকে আমি চিনি না। অটোতে উঠিয়ে বাউফল উপজেলা অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে মারধর করে ও খুনের হুমকি ধামকি দিয়ে আমার কাছে থাকা নগদ ত্রিশ হাজার টাকা নিয়ে যায় এবং একটি ব্ল্যাংক নিকাহনামায় স্বাক্ষর নেয়। কিছুক্ষণ পরে বাউফল থানা পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে, কোর্টে পাঠায় এবং আইনজীবীর জিম্মায় ছেড়ে দেয়।
বাউফল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শোনিত কুমার গায়েন বলেন, কোর্টের নির্দেশ মতে পাওয়া সংবাদে আমরা ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে কোর্ট পুলিশ পরিদর্শকের নিকট হস্তান্তর করি। এরপর কোর্ট প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে এঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।
আইনজীবী সৈয়দ মোস্তাফিজুর রহমান হাসিব জানান, মঙ্গলবার আমার মক্কেল মোস্তাফা কামালের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে সি আর ৪৯৭/২০২৩ মামলার তারিখ ধার্য্য থাকায় আদালতে হাজির হতে আসে। হাজিরা প্রদান কার্যক্রম সম্পন্ন করে ফিরে যাওয়ার সময় মামলার বাদী নাসরিন সন্ত্রাসীদের নিয়ে জোরপূর্বক অটোরিশায় করে উঠিয়ে নিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, আমি আদালতের দৃষ্টিতে নিয়ে আসলে আদালত দ্রুত উদ্ধার ও আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আদেশ দিলে, পুলিশ ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে এবং আদালতের মাধ্যমে আমার জিম্মায় হস্তান্তর করে। এবিষয়ে আমরা বিজ্ঞ আদালতে একটি অপহরণ মামলার আবেদন করবো।
মাহমুদ হাসান রায়হান/আরকে