গাজীপুরে ব্যাংক থেকে ৯ লাখ টাকা তুলে লাপাত্তা সমাজসেবা কর্মচারী
গাজীপুরের শ্রীপুরে সমাজসেবা অফিসের এতিম তহবিলের ৮ লাখ ৭৬ হাজার টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছেন অফিস সহায়ক আল-মামুন। এ ঘটনায় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।
গত ১৬ ও ১৭ অক্টোবর দুটি চেকের মাধ্যমে এ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়।
বিষয়টি জানাজানি হওয়ার চার দিন পর সমাজসেবা অফিস থেকে সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্তও হচ্ছে। অভিযুক্তকে ধরতে অভিযান চালাবো। তবে সমাজসেবা বিভাগকে অডিট করে সুনির্দিষ্টভাবে কত টাকা নিয়েছে তা জানাতে বলেছি।
টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা সমাজসেবা বিভাগের উপপরিচালক এসএম আনোয়ারুল আবেদীন।
তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, শুনেছি দুটি চেকের মাধ্যমে এতিম তহবিলের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। এ ছাড়াও আইনগত ব্যবস্থা নিতে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে। এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও অবগত করা হয়েছে।
তবে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি শ্রীপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ফারহা আক্তার।
তিনি বলেন, এখানে যা ঘটেছে তা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। তাদের নির্দেশনা মোতাবেকই কাজ করা হচ্ছে। আপনাদের যা জানার দরকার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জেনে নেন। আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ ছাড়া কোনো ধরনের বক্তব্য দিতে পারবো না।
উপজেলা সমাজসেবা অফিসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী বলেন, সমাজসেবা কর্মকর্তার কাছের লোক ছিলেন আল মামুন। তাকে দিয়েই অফিসের সব কাজ করাতেন তিনি। এমনকি নৈশপ্রহরী থাকার পরও রাতের বেলায় অফিসে থাকার ব্যবস্থাও করে দিয়েছিলেন সমাজসেবা কর্মকর্তা। তার কাছে অফিসের সকল নিয়ন্ত্রণ ও আলমারির চাবিও থাকতো। সেই সূত্র ধরেই আলমিরা থেকে সমাজসেবা কর্মকর্তার সই করা চেকের দুটি পাতা নিয়ে সোনালী ব্যাংক থেকে ৮ লাখ ৭৬ হাজার টাকা উঠিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান আল মামুন। ঘটনার পর থেকেই সমাজসেবা কর্মকর্তা বিষয়টি নিয়ে লুকোচুরি খেলছেন।
ঘটনা জানাজানির পর থেকেই টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠা শ্রীপুর উপজেলা সমাজসেবা অফিসের অফিস সহায়ক আল-মামুন গা ঢাকা দিয়েছেন।
এ বিষয়ে তার বক্তব্য জানতে অফিসে গিয়েও পাওয়া যায়নি। ব্যবহৃত মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ব্যারিস্টার সজিব আহমেদ বলেন, আমরা পুরো বিষয়টি অবগত। ইতোমধ্যে ওই অফিস সহায়কের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে। সে মোতাবেক কাজও হচ্ছে। এ ছাড়াও তাকে আইনের আওতায় আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
শিহাব খান/এএমকে