রোজায় টক দইয়ের চাহিদা তুঙ্গে

দইয়ের শহরখ্যাত বগুড়ায় রমজানকে ঘিরে বাড়ছে টক দই বিক্রি। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সারাদিন রোজা রেখে ইফতারে টক দই দ্বারা ঠান্ডা শরবত বা ঘোল বানিয়ে পান করে তৃষ্ণা মেটান। শরীর দ্রুত শীতল করায় দিন দিন টক দই বা সাদা দই ইফতারে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি তাপমাত্রা যত বৃদ্ধি পাবে ততই চাহিদা বাড়বে টক দইয়ের।
নানাবিধ পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ টক দই রোজাদারের শরীরের ক্লান্তি দূর করে। দুধের চেয়ে বেশি ক্যালসিয়াম ও ভিটামিনসমৃদ্ধ টক দইয়ে রয়েছে বিভিন্ন উপকারী ব্যাকটেরিয়া, প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল ও ফসফরাসের মতো উপাদান। এ ছাড়া নিয়মিত টক দই খেলে হজমশক্তির পাশাপাশি বাড়ে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাও।

রমজানে বগুড়ায় শহরের, ফতেহ্ আলী বাজার, রাজাবাজার, বউবাজার, বকশিবাজার, চেলোপাড়া, কাজী নজরুল ইসলাম সড়ক, গোহাইল রোড, স্টেশন সড়ক, কাঁঠালতলা, জলেশ্বরীতলা, বাদুরতলা, কালিতলা বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, এসব এলাকার দইয়ের দোকানগুলো এবং ফুটপাতে বসা দোকানগুলোতে এখন মিষ্টি দইয়ের তুলনায় টক দইয়ের কদর বেশি। এসব দোকানগুলোতে ৮০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকায় টক দই বিক্রি হচ্ছে। আর ফুটপাতে, মান ও আকার ভেদে ৬০ টাকা থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এসব দই। রোজাদার ব্যক্তিদের জন্য দই এখন ইফতারে অন্যতম আকর্ষণ।
জানা যায়, সারা দেশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শীতের শেষে বগুড়াতেও বেড়েছে তাপমাত্রা। একইসঙ্গে শুরু হয়েছে পবিত্র মাহে রমজান। যার ফলে বেড়েছে টক দইয়ের চাহিদা।

শহরের ফাতেহ্ আলী বাজারে মডার্ন দই ঘরের স্বত্বাধিকারী শ্রী অমল ঘোষ বলেন, রমজানের মিষ্টি দইয়ের চেয়ে টক দইয়ের চাহিদা বেশি থাকে। রমজানে ইফতারিতে টক দই দিয়ে তৈরি পানীয় রোজাদারদের প্রধান পানীয়। তাই টক দইয়ের বিক্রি এ সময় বেশি হয়। রোজার প্রথম দিনে দুপুরের মধ্যেই সব দই বিক্রি হয়ে যায়।
বউ বাজার এলাকায় নাজ রেস্টুরেন্টে টক দই কিনতে আসা তানজিম নামে একজন বলেন, সারাদিন রোজা শেষে ইফতারের সময় তৃষ্ণা মেটাতে সাদা দইয়ের স্বাদের বিকল্প নেই। টক দই সাদে ও মানে ভালো। আমার পরিবারের সবারই সাদা দই খুব পছন্দ। রমজান মাসের প্রত্যেকটা দিনই সাদা দই দিয়ে তৈরি শরবত পান করি আমরা।

বগুড়া কইপাড়া আবাসিক এলাকায় রমজান মাসকে ঘিরে টক দই বিক্রি করছেন কলেজছাত্র রফিক। তিনি বলেন, রমজানের এ মাসে সাদা দইয়ের চাহিদা থাকে তুঙ্গে। পবিত্র মাসজুড়ে কলেজ বন্ধ থাকায় বাড়ির সামনে টক দই বিক্রি করার চিন্তা থেকেই দই বিক্রি শুরু করেছি। ঘোষপাড়া থেকে দই সংগ্রহ করে এখানে বিক্রি করছি। আমি এখানে ৩০০ গ্রাম টক দই ৬০ টাকা, ৪০০ গ্রাম ৮০ টাকা, এবং হাফ কেজি ওজনের হাড়ি ১৮০ টাকায় বিক্রি করছি। রমজানের তৃষ্ণা মিটাতে এলাকার লোকজন আমার এখান থেকে দই নিচ্ছেন।
বগুড়া এশিয়া সুইটসের জেনারেল ম্যানেজার মো. আরিফ উজ্জামান দিপু বলেন, সারা বছরের চেয়ে এখন সাদা দইয়ের চাহিদা অনেক। বিকেল হতে না হতেই দই ফুরিয়ে যায়। রোজায় সাদা দই (চিনিমুক্ত) ২৫৫ টাকা এবং টক দই ১৮০ টাকায় বিক্রি করছি। বহুকাল ধরে ইফতারে অপরিহার্য হয়ে উঠেছে বগুড়ার সাদা বা টক দই।
এএমকে