লালমনিরহাটে ২৪ ঘণ্টায় শিশুসহ তিনজন ধর্ষণের শিকার

লালমনিরহাটে ২৪ ঘণ্টায় পৃথক তিনটি ধর্ষণ ও ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। উভয় ঘটনায় দুই ধর্ষককে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী। রোববার (১৬ মার্চ) বিকেলে হাতীবান্ধা উপজেলার বুড়া সারডুবি গ্রামে ৫ বছরের শিশুকে ধর্ষণ করে চাচা রবিউল ইসলাম (১৩)। একই দিন সকালে সদর উপজেলার উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের কাশিরঝাড় এলাকায় ৮ বছরের শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা এবং শনিবার দুপুরে আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের তালুক হরিদাস গ্রামে প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের সরল খাঁ গ্রামের শওকত আলীর ছেলে আইসক্রিম বিক্রেতা শাহিন মিয়া(৩০) এবং অপরজন লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের কাশিরঝাড় গ্রামের মৃত বশির উদ্দিনের ছেলে মেহের আলী ওরফে মেহের চোর (৫৫)।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রোববার উপজেলার বুড়া সারডুবি গ্রামে বিকেলে বাড়িতে শিশুটি (৫) একা থাকার সুযোগে তার চাচা রবিউল ইসলাম ঘরে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে শিশুটির আত্মচিৎকারে বাড়ির লোকজন ছুটে এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অভিযুক্ত রবিউল ইসলামকে ধরতে দফায় দফায় অভিযান করেও তাকে আটক করতে পারেনি বলে নিশ্চিত করেন হাতীবান্ধা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুন নবী।
এদিকে, রোববার সকালে সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের কাশিরঝাড় গ্রামে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী আলু তোলার জন্য খেতে যাচ্ছিল। বাড়ির পাশে একটি তামাক খেতে বসে থাকা মেহের আলী ওই স্কুলছাত্রীকে আটক করে তামাকখেতে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় শিশুটির চিৎকারে বাড়ির লোকজন ও স্থানীয়রা ছুটে গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। তারা মেহের আলীকে ঘটনাস্থলে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে। মেহের আলী একজন পেশাদার চোর। গ্রামে তার বিরুদ্ধে একাধিক নারী নিপীড়নের অভিযোগ রয়েছে।
লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরনবী জানান, অভিযুক্ত মেহের আলীকে আটক করা হয়েছে। শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। খুব দ্রুত তার বিরুদ্ধে চার্জশিট আদালতে দাখিল করা হবে।
অপরদিকে, শনিবার দুপুরে আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের তালুক হরিদাস গ্রামে বাক ও শারীরিক প্রতিবন্ধি তরুণীকে (২৮) বাড়িতে রেখে সকালে খেতে কাজে যান। প্রতিবন্ধী মেয়েটি বাড়িতে একা ছিলেন। এ সুযোগে আইসক্রিম খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে স্থানীয় শাহিন ওই তরুণীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এরই মাঝে কাজ শেষ করে ওই তরুণীর ভাই বাড়িতে এসে তাদেরকে বিবস্ত্র অবস্থায় দেখতে পেয়ে শাহিনকে আটক করে চিৎকার দেয়। স্থানীয়রা ছুটে এসে আটক তাকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। এ ঘটনায় তরুণীর বাবা বাদী হয়ে আদিতমারী থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন।
আদিতমারী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আকবর বলেন, নির্যাতিত তরুণীর বাবার দায়ের করা এজাহারটি নিয়মিত মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে শাহিনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। একই সাথে নির্যাতিত তরুণীকে আলামত সংগ্রহের জন্য লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিয়াজ আহমেদ সিপন/এমএএস