নাসিক ভবনে অটোরিকশা চালকদের তাণ্ডব, আহত ১৮

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ভবনে হামলা চালিয়েছে অনুমোদনহীন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকরা। এ ঘটনায় অন্তত ১৮ জন আহত হয়েছেন। সোমবার (১২ মে) দুপুরে নিতাইগঞ্জস্থ নগর ভবনে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ শহরে অনুমোদনহীন অবৈধ অটোরিকশা চলাচল নিষিদ্ধ করায় এর প্রতিবাদে সোমবার দুপুরে নগর ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে অবৈধ অটোরিকশা চালকরা। পরে সশস্ত্র অটোরিকশা চালকরা নগর ভবনের প্রধান ফটকের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলা ও তাণ্ডব চালায়। এতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
খবর পেয়ে সদর মডেল থানা পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করলেও এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি। তবে ঘটনার পর নগর ভবনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রথমে শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করলেও কিছুক্ষণ পর অটোরিকশা চালকরা বেপরোয়া হয়ে উঠলে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে অটোরিকশা চালকরা রাম দা, ছুরি, চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল, রড, পাইপ ও লাঠিসহ দেশীয় এবং অস্ত্রশস্ত্র হাতে নিয়ে নগর ভবনের প্রধান ফটকে হামলা চালায়। এসময় যানজট নিরসনে নিয়োজিত কর্মীরা বাধা দিলে তাদেরকে মারধর করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের দাবি, হামলার ঘটনায় যানজট নিরসনে নিয়োজিত শিক্ষার্থী জান্নাতুল নাঈম শাওন, সম্রাট, কামরুন্নাহার শিমলা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ১৮ জন আহত হয়েছেন। আহতদের নগর ভবন সংলগ্ন সদরের নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ জাকির হোসেন।
তিনি বলেন, অনুমোদনহীন অবৈধ অটোরিকশা চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে অটো চালকরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অতর্কিতভাবে আমাদের কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। আমাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখে। অনেককে মারধর করে ও পিটিয়ে আহত করে। আবার কয়েকজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে আহত করেছে। সর্বমোট আমাদের ১৮ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে যানজট নিরসন কাজে নিয়োজিত ১২ জন ছাত্র প্রতিনিধি রয়েছেন। বাকিরা আমাদের কর্মকর্তা কর্মচারী। আহতদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা বেশি গুরুতর। আমরা এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
প্রসঙ্গত নারায়ণগঞ্জ শহরে অনুমোদনহীন অটোরিকশা বন্ধে সিটি করপোরেশন লাইসেন্স চালু করে। এর মাধ্যমে অটোচালকদের যাত্রী হয়রানি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় এবং সড়কে বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টা করে যাচ্ছে নাসিক। তবে নিবন্ধনবিহীন অটোচালকরা পূর্বের ন্যায় নিবন্ধন ছাড়াই শহরে চলাচলের দাবি জানিয়ে আসছে।
মেহেদী হাসান সৈকত/এমএএস