অটোরিকশা থেকে মাদরাসায় নামিয়ে দেওয়ায় বেঁচে ফিরল শিশু আতাউল্লাহ

কক্সবাজারের রামুতে ট্রেনের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার চারজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় আতাউল্লাহ নামে এক শিশুর মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশ পেলেও রাতে শিশুটির পরিবার ও পুলিশ সূত্রে তার বেঁচে থাকার খবর পাওয়া গেছে।
রামু থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ তৈয়বুর রহমান ঢাকা পোস্টকে জানান, প্রথমে মরদেহগুলোর ক্ষত-বিক্ষত অংশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় মনে হচ্ছিল নিহতের সংখ্যা ৫ হবে। যেহেতু নিহত যাত্রীদের পরিবার জানতো চালক বাদে তাদের চার সদস্য অটোরিকশাটিতে ছিল। তবে ৯ বছর বয়সী আতাউল্লাহকে তার মা আসমা আরা পথিমধ্যে ঘোনারপাড়ার এলাকার একটি মাদরাসায় নামিয়ে দেন এবং বিকেলে সে বাড়ি ফিরে আসে বলে পরিবারের বরাত দিয়ে জানান ওসি।
এর আগে শনিবার (২ আগস্ট) দুপুর ২টায় রামু উপজেলার রশিদনগর ইউনিয়নের রেলক্রসিং এলাকায় ঘটা এই দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান আতাউল্লাহর মা আসমা আরা (৩৫), তার ভাই আশেক উল্লাহ (৬), খালা রেণু আরা (৪০) ও অটোরিকশা চালক হাবিব উল্লাহ (৪৫)।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনাকবলিত অটোরিকশাটি কক্সবাজার সদর উপজেলার ভারুয়াখালী থেকে রামু যাচ্ছিল। ট্রেনের অবস্থান না বুঝে রেলক্রসিংয়ে উঠে পড়লে অটোরিকশাটি ঢাকামুখী ট্রেনের সামনে পড়ে গিয়ে ইঞ্জিনের সঙ্গে আটকে যায়। কিছুদূর অটোরিকশাটিকে ঠেলে নিয়ে যায় ট্রেন। এতে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে অটোরিকশায় থাকা সবার দেহ। এ দুর্ঘটনার পর কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেনটি গন্তব্যে চলে যায়। কিন্তু রামুর পানিরছড়া এলাকায় ঢাকা থেকে কক্সবাজারগামী পর্যটক এক্সপ্রেস আটকে রাখেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা বিক্ষোভ করে দুর্ঘটনা রোধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি করেন। রামু থানার ওসি তৈয়বুর রহমান তখন বিষয়টি নিয়ে ওপর মহলে জানানোর আশ্বাস দেন। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করেন র্যাব পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। পরে বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে ট্রেনটি ছেড়ে দেন স্থানীয়রা। আড়াই ঘণ্টা দেরিতে ট্রেনটি কক্সবাজার পৌঁছেছে বলে জানান সহকারী স্টেশন মাস্টার আক্তার হোসেন।
এ দিকে দুর্ঘটনার পর তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় রেলওয়ে দপ্তর। এতে সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা, সহকারী যান্ত্রিক প্রকৌশলী ও সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলীকে সদস্য করা হয়েছে।
আরএআর