খুলনার বাস্তুহারা কলোনিতে সংঘর্ষ : দুই মামলায় আসামি ৫০০

খুলনা মহানগরীর খালিশপুরের বাস্তুহারা কলোনিতে উচ্ছেদ অভিযানের সময় পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের সংঘর্ষের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের হয়েছে। দুই মামলার মধ্যে একটিতে ৩৭ জন এবং অপরটিতে ৩২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) খালিশপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর আতাহার আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাস্তুহারা কলোনিতে সরকারি কাজে বাধা ও হামলার ঘটনায় রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি মামলা দায়ের হয়েছে। তবে দুটি মামলায় কমন আসামি।
তিনি বলেন, একটি মামলা জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ খুলনার উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী আল মুজাহেদী মোহাম্মদ মাহসুদুল হক বাদী হয়ে ৩২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করেছেন। অপর মামলাটি খালিশপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কোটাল আজাদ বাদী হয়ে ৩৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২১ সেপ্টেম্বর সকালে উপজেলার মুজগুন্নি বাস্তুহারা কলোনির বয়রা হাউজিং এস্টেট, সি ব্লকে (বাস্তুহারা মুক্তিযোদ্ধা কলোনি) অবৈধ উচ্ছেদ অভিযানের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও কলোনির বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। ওই সংঘর্ষের ঘটনায় গোটা এলাকায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিক্ষুব্ধরা সেখানে টায়ার জ্বালিয়ে, গাছের গুঁড়ি ফেলে রাস্তা অবরোধ করে রাখে।
এ ঘটনায় পুলিশের লাঠিচার্জ এবং স্থানীয়রা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় পুলিশ পিছু হটতে বাধ্য হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ, সাংবাদিক, স্থানীয় বাসিন্দাসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়।
স্থানীয়রা জানান, কিছু বুঝে ওঠার আগেই উচ্ছেদ করতে আসা পুলিশ বাহিনী আমাদের উপর লাঠিচার্জ ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেন। এ ঘটনায় ৬০ থেকে ৭০ জন আহত হয়।
পুলিশ জানায়, উচ্ছেদ অভিযান শুরুর আগেই তাদের উপর হামলা চালায় কলোনির বাসিন্দারা। হামলায় ওসিসহ ১৪ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।
খালিশপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর আতাহার আলী বলেন, এ ঘটনায় পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।
উল্লেখ্য, খুলনার মুজগুন্নির বাস্তুহারার ২ একর জায়গায় বাস করছে প্রায় ২০০ পরিবার। তবে ১৯৮৭ সালে গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ পাশের এই জায়গাটি লটারির মাধ্যমে প্লট আকারে বিক্রি করেন। ৩৫ বছর পার হলেও এখনও জায়গা বুঝে পাননি সেখানকার ৪২ প্লট মালিক।
মোহাম্মদ মিলন/বিআরইউ