ঝালকাঠিতে বিএনপির দুই নেতার পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন

ঝালকাঠির-১ (রাজাপুর ও কাঁঠালিয়া) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী দুই নেতার মধ্যে উত্তেজনা চরমে উঠেছে। গাড়িবহরে হামলার অভিযোগ এনে মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক ছাত্রনেতা গোলাম আজম সৈকত সংবাদ সম্মেলন করলে অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
গাড়িবহরে হামলার অভিযোগ এনে গোলাম আজম সৈকত রোববার (১২ অক্টোবর) দুপুর ১টায় ঝালকাঠি প্রেসক্লাবের কাজী খলিলুর রহমান মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন। অন্যদিকে একই সময়ে রাজাপুর উপজেলার বাঘরী এলাকায় বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা নাসিম উদ্দিন আকনের বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ অস্বীকার করেন রফিকুল ইসলাম জামাল।
গোলাম আযম সৈকত বলেন, আমরা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা কর্মসূচির লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ শেষে বাড়ি ফিরছিলাম। গত ১১ অক্টোবর রাত ১২টার দিকে রাজাপুরের পুটিয়াখালীর মিরের হাট সোনালী মোড়ে রফিকুল ইসলাম জামালের অনুসারীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমাদের গাড়িবহরে হামলা চালায়। এতে শ্রমিক দল নেতা সোহেল, বিএনপি নেতা ইউনুস মেম্বার, ইলিয়াস মোল্লা, রিপন বিশ্বাসসহ অন্তত ১০ জন আহত হন এবং একটি হাইয়েস মাইক্রোবাস ভাঙচুর করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা জনসংযোগ করছি, মাঠে ঘাটে বাড়ি বাড়ি জনসাধারণের কাছে যাচ্ছি, জনসমর্থন আদায় করছি, তা দেখে কিছু পক্ষ সহ্য করতে পারছে না। অন্যদিকে রফিকুল ইসলাম জামাল রাজাপুরের বহিস্কৃত বিএনপি নেতা নাসিম আকনকে সাথে নিয়ে তার কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন। যা দলীয় নিয়ম নীতির সম্পূর্ণ পরিপন্থি। যারা এই হামলার সঙ্গে জড়িত, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

অন্যদিকে রফিকুল ইসলাম জামাল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রাজাপুরের পুটিয়াখালী এলাকার ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার বিরুদ্ধে গুজব রটানো হচ্ছে। আমার একাধিক নেতাকর্মীর নামও উদ্দেশ্যমূলকভাবে জড়িয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ আনা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
তিনি আরও দাবি করেন, গোলাম আজম সৈকত নামে একজন বিতর্কিত ব্যক্তি ও তার কয়েক ভাই এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে। তিনি অতীতে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কারণে কেন্দ্র থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন - বিষয়টি যাচাই করলে সত্যতা পাওয়া যাবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঝালকাঠি জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, গত রাত ২টার দিকে আমি এই ঘটনার খবর পাই। ভুক্তভোগী গোলাম আজম সৈকত আমাকে ছবি ও ভিডিও পাঠিয়েছে - ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত। সামনে জাতীয় নির্বাচন। এই মুহূর্তে এমন সংঘাতমূলক কর্মকাণ্ড দলের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। খুব শিগগিরই দলের কেন্দ্র থেকে প্রার্থী ঘোষণা হবে। এই মুহূর্তে এমন কর্মকাণ্ড গ্রহণযোগ্যে নয়।
তিনি আরও বলেন, রফিকুল ইসলাম জামাল যে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন, সেটিও বিতর্কিত, কারণ তা অনুষ্ঠিত হয়েছে এক বহিষ্কৃত নেতার বাড়িতে। দলের নিয়মশৃঙ্খলা ভঙ্গ করে এই ধরনের আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়।
শাহীন আলম/আরএআর