ফরিদপুরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

ফরিদপুরে স্ত্রী সাজিয়া আফরিনকে (১৯) ১০ লাখ টাকা যৌতুক না পেয়ে হত্যার দায়ে স্বামী সোহানুর রহমানকে (৩৬) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুর ১টার দিকে ফরিদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) শামীমা পারভীন এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি হাজির না থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
এ মামলার বাকি সাত আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের খালাসের আদেশ দেন। এই সাত আসামির প্রত্যেকেই সোহানুরের আত্মীয়-স্বজন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সোহানুর রহমান ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট মহল্লার বাসিন্দা মিজানুর রহমানের ছেলে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, সোহানুর রহমান ২০১৫ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর শহরের আলীপুর খাঁপাড়া মহল্লার বাসিন্দা শওকত হোসেন খানের মেয়ে সাজিয়া আফরিনকে বিয়ে করেন। ২০১৭ সালের ১১ জানুয়ারি সাজিয়াকে বধূ সাজিয়ে নিজের বাড়িতে নেন সোহানুর। নিজের বাড়িতে নেওয়ার পর থেকেই বউয়ের কাছে ১০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবি করে আসছিলেন তিনি। তবে এ দাবি অনুযায়ী টাকা দিতে ব্যর্থ হন সাজিয়ার বাবা-মা। পরে ২০১৭ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে সাজিয়াকে হত্যা করে বাড়ির বারান্দায় ফেলে রাখেন স্বামী। পরদিন সকালে ওই বাড়িতে গিয়ে এই অবস্থা দেখেন সাজিয়ার মা রুমানা খান। দুইদিন পর নিজ মেয়েকে হত্যার অভিযোগে জামাতা সোহানুরসহ তার পরিবারের আট সদস্যকে আসামি করে ১ মার্চ ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন তিনি।
এ মামলাটি তদন্ত করেন ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল গাফফার। তিনি ২০১৭ সালের ৯ সেপ্টেম্বর এজাহারের আট আসামিকেই অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
এরপর দীর্ঘ আট বছরের শুনানি ও যুক্তি-পাল্টা যুক্তি শেষে আদালত বৃহস্পতিবার প্রধান আসামি স্বামী সোহানুর রহমানকে মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন।
মামলার সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) গোলাম রব্বানী ভুঁইয়া বলেন, রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সোহানুর রহমান পলাতক ছিলেন। এজন্য তার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। এ রায় সমাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। যৌতুক ও হত্যার মতো ব্যাধি সমাজে কমাতে ভূমিকা রাখবে।
জহির হোসেন/আরএআর