ব্যবসায়ী আনোয়ার হত্যা মামলায় দুই জনের মৃত্যুদণ্ড, ৫ জনের যাবজ্জীবন

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন হত্যা মামলায় দুইজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং একই মামলায় জড়িত আরও পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত দায়রা জজ ৩য় আদালতের বিচারক সাবরিনা নার্গিস এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন চৌদ্দগ্রামের দেড়কোটা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে জিয়া উল্লাহ ওরফে জিয়া এবং একই গ্রামের ইয়াকুব মিয়ার ছেলে জুয়েল রানা ওরফে জুয়েল। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন চৌদ্দগ্রামের দেড়কোটা গ্রামের ক্বারী ফজলুল হক, আজাদ রহমান, আবদুল কাদের, কবির আহমেদ এবং ফেলনা গ্রামের সাদ্দাম হোসেন। রায় ঘোষণার সময় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি কবির আহমেদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি ছয় আসামি পলাতক রয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী মুমিনুল হক ভূইয়া জানান, ২০১৩ সালের ২২ এপ্রিল সন্ধ্যায় পূর্ববিরোধের জেরে জিয়া উল্লাহ ওরফে জিয়া এবং তার সহযোগীরা আনোয়ার হোসেনের দোকানে হামলা ও ভাঙচুর চালান। বাধা দিলে তারা আনোয়ার হোসেনকে কুপিয়ে আহত করেন। পরে তাকে শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আনোয়ার মারা যান।
পরদিন ২৩ এপ্রিল নিহতের বাবা দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করে চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে ওই বছরের ২৯ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। পরে ২০১৪ সালের ২৬ আগস্ট জেলা ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) জিল্লুর রহমান আদালতের নির্দেশে ১৯ জনের বিরুদ্ধে পুনরায় চার্জশিট দাখিল করেন।
২৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত দায়রা জজ ৩য় আদালতের বিচারক সাবরিনা নার্গিস দুইজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া চার্জশিটভুক্ত ১২ জন আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
আরিফ আজগর/এআরবি