সীমান্তের শূন্যরেখায় বোনকে শেষবারের মতো দেখলেন ভাই

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বিজিবি। সীমান্তের শূন্যরেখায় শেষবারের মতো ভারতীয় নাগরিক ফনি বেগম (৭৫) নামের এক নারীর মরদেহ তার ভাই ও আত্মীয়-স্বজনদের দেখার সুযোগ করে দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ)।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সীমান্ত এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিজিবির এমন মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপনে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
বিজিবির সূত্রে জানা যায়, ভারতের মালদা জেলার কালিয়াচক থানার হাজিপাড়া গ্রামের কসিমুদ্দিনের স্ত্রী বার্ধক্যজনিত কারণে বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টার দিকে মারা যান। মৃত্যুর খবর পেয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের জামিনপুর গ্রামে বসবাসরত ফনি বেগমের ভাই আতাউর রহমান (৬০) মরদেহ দেখতে বিজিবির কাছে আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিজিবি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাদের সাড়া পেলে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মরদেহ স্বজনদের দেখানোর আয়োজন করা হয়। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় মহানন্দা ব্যাটালিয়নের (৫৯ বিজিবি) কিরণগঞ্জ বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকার সীমান্ত পিলার ১৭৯/৩-এস এর নিকট শূন্য লাইনে বিজিবি-বিএসএফ এর উপস্থিতিতে মৃতের লাশ দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়। এ সময় মরদেহ দেখে বাংলাদেশি আত্মীয়-স্বজনরা আবেহগাপ্লুত হয়ে পড়েন এবং শেষবারের মতো তাদের আত্মীয়কে দেখে পরিতৃপ্ত হন। তারা বিজিবির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
বিনোদপুর ইউপির সদস্য মো. কামাল উদ্দিন বলেন, আমাদের এলাকার এক মেয়ের ভারতে বিয়ে হয়েছিল অনেক বছর আগে। সে তার স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে ভারতেই বসবাস করতো। বার্ধক্যজনিত কারণে সে গতকাল মারা যায়। পরে তার ভাই বিজিবির কাছে আবেদন করে। পরে আজকে সীমান্ত এলাকায় লাশ দেখানোর ব্যবস্থা করে বিজিবি। এতে আমরা এলাকাবাসী বিজিবির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
৫৯ বিজিবির অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, মৃত্যুর খবর পেয়ে তার ভাইসহ বাংলাদেশি স্বজনরা মরদেহ দেখতে বিজিবির কাছে আবেদন করেন। এ বিষয়ে বিএসএফের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়। পরে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মরদেহ স্বজনদের দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়।
আশিক আলী/আরকে