ফরিদপুর-৪ আসনে ফিরলো আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন

অবশেষে ফরিদপুর-৪ আসনে ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন ফের ভাঙ্গার সীমানায় ফিরেছে। নির্বাচন কমিশনের জারি করা প্রজ্ঞাপনকে ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে আগের অবস্থায় সীমানা ফেরত আনার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন। রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব।
এর আগে, গত ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন প্রজ্ঞাপন জারি করে ফরিদপুর-৪ আসনের ভাঙ্গা উপজেলা থেকে আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর-২ আসনের নগরকান্দা উপজেলার সঙ্গে যুক্ত করে। ওই প্রজ্ঞাপনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ফরিদপুর-৪ আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী মো. শহিদুল ইসলাম বাবুল, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহবুবুর রহমান দুলালসহ পাঁচজন রিট করেন। এরপর ২২ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুল জারি করেন।
প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকেই ভাঙ্গাজুড়ে তীব্র আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। গত ৫ সেপ্টেম্বর দুটি মহাসড়ক অবরোধ হয় দুই ঘণ্টা। ১৫ সেপ্টেম্বর রাজপথ–রেলপথ অবরোধের সময় ভাঙ্গা উপজেলা কমপ্লেক্স, ভাঙ্গা থানা ও হাইওয়ে থানায় ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। ওইদিন অবরোধ চলাকালে অসুস্থ হয়ে মারা যান আলগী ইউনিয়নের শাহমুল্লুকদী গ্রামের হাবিবুর রহমান (৭০)।
এ ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটিসহ মোট চারটি মামলা হয়। মামলায় ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সাংসদ ও যুবলীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরীসহ ১৬৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।
পরে ৭ ডিসেম্বর মামলার অজ্ঞাত আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার আলগীর সোনাখোলা গ্রামের জাকের মোল্লা (৫০) কারাগারে অসুস্থ হয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
হাইকোর্টের এই রায়ের পর স্বস্তি ফিরে এসেছে ভাঙ্গায়। বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম তার ফেসবুক আইডিতে প্রতিক্রিয়ায় লিখেছেন, ‘শুরু থেকেই বলেছিলাম—এই দুই ইউনিয়ন আমরা ফেরত আনব। আদালত আজ সেই ন্যায়বিচারই করলেন।’
রায় ঘোষণার পর ফেসবুক লাইভে প্রতিক্রিয়া জানান ফরিদপুর-৪ আসনের জামায়াতে ইসলামের প্রার্থী সরোয়ার হোসাইন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এম এম হোসাইন। তারা রায়কে ‘জনতার বিজয়’ বলে উল্লেখ করেন।
রায় ঘোষণার পর ভাঙ্গা উপজেলা জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও খেলাফত মজলিসের নেতা-কর্মীরা আনন্দ মিছিল করেন।
ভাঙ্গার আলগী ইউনিয়নের মুনসুরাবাদ গ্রামে রায় ঘোষণার খবর পৌঁছাতেই দেখা যায় খুশির উচ্ছ্বাস। মুনসুরাবাদ বাসিন্দা দুদু মোল্লা (৫৮) বলেন, আমরা জন্মেছি ভাঙ্গায়, মরবও ভাঙ্গায়। আজ মনে হচ্ছে নিজের ঘর ফিরে পেলাম।
জহির হোসেন/এএমকে