অবৈধভাবে সার মজুদ করায় গুদাম সিলগালা, ব্যবসায়ীর জেল

অবৈধভাবে সার মজুদ করে রাখার অভিযোগে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় আব্দুল্লাহ নামে এক ব্যবসায়ীর গুদাম সিলগালা করেছে প্রশাসন। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত ওই ব্যবসায়ীকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। জব্দ করা হয় ইউরিয়া, পটাশ ও ফসফেটসহ মোট ৭৬৬ বস্তা সার।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতের দিকে সদর উপজেলার খোচাবাড়ি বাজার এলাকায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ অভিযান চালানো হয়। অভিযান পরিচালনা করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাইরুল ইসলাম। এ সময় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাসিরুল ইসলামসহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে দীর্ঘদিন ধরে সার সংকট ও অবৈধ মজুদের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছিল। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জগনাথপুর ইউনিয়নের খোচাবাড়ি বাজারে অভিযান চালানো হয়। অভিযানের সময় ‘সোনালি ট্রেডার্স’ নামের একটি কীটনাশক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের গুদামে বিপুল পরিমাণ সার মজুদ দেখতে পান কর্মকর্তারা।
পরে ওই সারের ক্রয়সংক্রান্ত বৈধ কাগজপত্র দেখাতে বলা হলে ব্যবসায়ী আব্দুল্লাহ কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দাদের উপস্থিতিতে গুদাম তল্লাশি করে ইউরিয়া, পটাশ ও ফসফেটসহ ৭৬৬ বস্তা সার জব্দ করা হয়। এরপর গুদামটি সিলগালা করা হয়। এ ছাড়া, ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে লাইসেন্স ছাড়া সার ক্রয়, মজুদ ও বিক্রয়ের অভিযোগে সার ব্যবস্থাপনা আইন, ২০০৬ অনুযায়ী ব্যবসায়ী আব্দুল্লাহকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এদিকে স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, ডিলারদের কাছে দিনের পর দিন ঘুরেও সময়মতো সার পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক সময় সার পেতে অতিরিক্ত টাকা দিতে হচ্ছে। অবৈধ মজুদদাররা সুযোগ নিয়ে বস্তাপ্রতি বেশি দামে সার বিক্রি করছে। এতে কৃষকের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে।
খোচাবাড়ি এলাকার কৃষক মমিন বলেন, ডিলারের কাছে গেলে বলে সার নেই। কিন্তু বাজারে গেলে বেশি দামে ঠিকই পাওয়া যায়। আমরা বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত টাকা দিয়ে সার কিনছি।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাইরুল ইসলাম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। সারের কোনো বৈধ কাগজপত্র না থাকায় গুদাম সিলগালা করা হয়েছে এবং আইন অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হয়েছে। কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় এ ধরনের অভিযান নিয়মিত চালানো হবে।
রেদওয়ান মিলন/এএমকে