এনসিপি ছাড়ার ঘোষণা মওলানা ভাসানীর নাতির

মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নাতি আজাদ খান ভাসানী জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি দলটির কৃষক উইংয়ের প্রধান সমন্বয়কারী ছিলেন।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে তার নিজের ফেসবুক আইডিতে থেকে এক পোস্টে তিনি এ কথা জানান।
আজাদ খান ভাসানী তার ফেইসবুক পোস্টে বলেন, অনেক আশা ও স্বপ্ন নিয়ে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী তরুণদের হাত ধরে গঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টিতে (এনসিপি) আমি যুক্ত হয়েছিলাম। শুরু থেকেই জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে মহান মুক্তিযুদ্ধের অসমাপ্ত লড়াইয়ের এক ধারাবাহিক অধ্যায় হিসেবে আত্মস্থ করেছি। তেপ্পান্ন বছরের পুঞ্জীভূত বৈষম্য, শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের সংগ্রামে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখাই ছিল আমার সেই পথচলার প্রেরণা।
তিনি বলেন, মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর দেখানো গণমানুষ নির্ভর, আধিপত্যবাদ-সাম্রাজ্যবাদ ও বৈষম্যবিরোধী পালনবাদী রাজনীতির স্বপ্ন থেকেই প্রথমে জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং পরবর্তীতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে যুক্ত হই। সেই রাজনৈতিক ধারাবাহিকতায় দলের কৃষক উইংয়ের প্রধান সমন্বয়কারীর দায়িত্বও গ্রহণ করি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, বাস্তব অভিজ্ঞতায় নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের ঐতিহাসিক দায়বদ্ধতা, গণমানুষের প্রতি দরদ ও ত্যাগের যে গভীরতা প্রয়োজন এখানে তার স্পষ্ট ঘাটতি আমি অনুভব করেছি। নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ও স্বতন্ত্র পরিচয় গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও প্রত্যাশিত সাফল্য দেখা যায়নি।

তিনি আরও বলেন,এই বাস্তবতায় বেশ কিছুদিন ধরে সরাসরি সক্রিয় না থেকেও দলটির সঠিক রাজনীতি ও সাফল্য কামনা করে গেছি। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক দায়বদ্ধতা ও মওলানা ভাসানীর রাজনৈতিক আদর্শের পক্ষাবলম্বনই আমার কাছে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সেই দায় ও আদর্শের প্রতি অবিচল থাকতেই আজ জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে আমার আনুষ্ঠানিক সম্পর্কচ্ছেদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছি।
মওলানা ভাসানীর নাতি বলেন, এনসিপির সঙ্গে আমার এই স্বল্পকালীন পথচলায় কারো মনে কষ্ট দিয়ে থাকলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো। তারুণ্যের অভিযাত্রী দলটির প্রতি রইলো আন্তরিক শুভকামনা। গণমানুষের রাষ্ট্র বিনির্মাণের সংগ্রামে তারা যেন সঠিক পথ খুঁজে পায় এই প্রত্যাশাই থাকল।
উল্লেখ,গত ৬ সেপ্টেম্বর এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারীর অনুমোদনক্রমে কৃষক উইংয়ের প্রস্তুতি কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে প্রধান সমন্বয়কারী করা হয়েছিল আজাদ খান ভাসানীকে।
আরিফুল ইসলাম/আরকে