পাবনায় ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা

পাবনায় সুমন প্রামাণিক ( ৩৮) নামে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার জেরে নিহতের আত্মীয়স্বজন প্রতিপক্ষের তিনটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন।
শনিবার (৩ জুলাই) বেলা ২টার দিকে দোগাছি ইউনিয়নের দক্ষিণ রামচন্দ্রের ৭ নং ওয়ার্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সুমন দক্ষিণ রামচন্দ্রপুরের মো. বাকি বিল্লাহ প্রমাণিকের ছেলে। তিনি ওই এলাকায় বালির ব্যবসা করতেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সুমন প্রামাণিক শহর থেকে বাড়ি ফেরার পথে বেলা ২টা দিকে সদরের দোগাছি ইউনিয়নের দক্ষিণ রামচন্দ্রপুরের ৭ নং ওয়ার্ড এলাকায় দুর্বৃত্তরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করে। ঘটনার পরে উত্তেজিত এলাকাবাসী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পাশের তিনটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
নিহত সুমন প্রামাণিকের স্ত্রী রিমা খাতুন বলেন, আমার স্বামী অনন্ত বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। স্থানীয় একজন আমাকে গিয়ে বিষয়টি জানালে আমি দ্রুত ঘটনাস্থলে আসি। সেখানে গিয়ে দেখতে পাই টিটু, মিঠু, সঞ্জু ও মান্নার হাতে ধারালো অস্ত্র। এসব অস্ত্র দিয়ে তারা আমার স্বামীকে মারছে। আমি বাধা দিতে গেলে তারা আমাকেও মারতে আসে। খুনিদের চাচা সেলিম ও মানিক সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পরে স্থানীয়রা সুমনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সুমন প্রামাণিক প্রায় ৭ বছর বিদেশে ছিলেন। বিদেশ থেকে আসার পর স্থানীয় দোগাছি ইউনিয়েনের চেয়ারম্যান আলী হাসানের গাড়ি চালাতেন তিনি। সম্প্রতি তিনি সেই কাজ ছেড়ে দিয়ে বালির ব্যবসা শুরু করেন। গত বছর একই এলাকার কাউন্সিলর বকুল শেখকে হত্যা করা হয়। নিহত সুমন বকুল শেখের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। বকুল হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে এ হত্যাকাণ্ডের সম্পর্ক থাকতে পারে বলে ধারণা স্থানীয়দের।
সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে আসে। প্রতিপক্ষের লোকজন সুমনকে হাঁসুয়া ও রামদা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে জানতে পেরেছি। মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
পাবনা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আমরা তদন্ত করছি। পূর্ব শক্রতার জের ধরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। হত্যাকারীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান শুরু হয়ে গেছে। আশা করছি দ্র্রুতই আসামিদের আইনের আওতায় আনা যাবে।
রাকিব হাসনাত/এসকেডি