কনস্টেবল পদে নিয়োগ দিতে ১০ লাখ টাকা চুক্তি করেছিলেন তিনি

নিজেকে পরিচয় দিতেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর হিসেবে। পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) ঘনিষ্ঠ লোক বলেও পরিচয় দিতেন। কনস্টেবল পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ১০ লাখ টাকা চুক্তি করেছিলেন বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার সিংগাতী এলাকার প্রান্ত শীল বাপ্পির সঙ্গে। চুক্তি মোতাবেক পুলিশের মহাপরিদর্শকের সিল-স্বাক্ষর নকল করে কনস্টেবল নিয়োগের সুপারিশপত্র পাঠান বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হকের কাছে। শর্ত দেন খুব গোপনে যেন এই চিঠি দেওয়া হয় পুলিশ সুপারকে। কিন্তু চিঠি গোপনে দিলেও প্রকাশ্যে এসেছে এই অপরাধ।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) ভোরে বরিশাল শহর থেকে বাগেরহাট জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে স্বপন সিংহ (৪৫) নামে এই প্রতারককে গ্রেফতার করে।
বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে বাগেরহাট পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস কনফারেন্সে পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক এসব তথ্য জানান।
গ্রেফতার স্বপন সিংহ পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার গাবুয়া গ্রামের বিরেন্দ্রনাথ সিংহের ছেলে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক বলেন, ফকিরহাট উপজেলার সিংগাতী এলাকার প্রান্ত শীল বাপ্পিকে কনস্টেবল পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য দশ লাখ টাকা চুক্তি করেন প্রতারক স্বপন সিংহসহ চারজন। চাকরি দেওয়ার জন্য প্রতারক চক্রটি নিজেদের পুলিশ মহাপরিদর্শকের ঘনিষ্ঠ লোক বলে পরিচয় দেন। বাপ্পির পরিবারের কাছ থেকে নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর ও একটি ফাঁকা চেক নেন তারা। পুলিশ সুপারের বরাবর কনস্টেবল পদে আবেদনপত্রের একটি কপির পাশে পুলিশ মহাপরিদর্শকের নকল সিল ও স্বাক্ষর দিয়ে বাপ্পির পরিবারের কাছে দেন।
ওই আবেদনটি খুব গোপনে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার বরাবর দেওয়ার জন্য বলেন। প্রতারকদের পরামর্শ অনুযায়ী বাপ্পি আবেদনটি আমাদের দফতরে জমা দেন। আমরা আবেদনটি যাচাই-বাছাই করে জানতে পারি পুলিশ মহাপরিদর্শকের সিল ও স্বাক্ষর জাল। পরবর্তীতে বাপ্পির মা যুথিকা শীলের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা স্বপন সিংহকে গ্রেফতার করি। এই চক্রের সঙ্গে আরও তিনজন জড়িত রয়েছে। তাদেরকে গ্রেফতারে পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক কখনও কনস্টেবল পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেন না। কনস্টেবল নিয়োগ হবে যোগ্যতা ও দক্ষতা অনুযায়ী। কোনো সুপারিশে এখানে চাকরির সুযোগ নেই।
তানজীম আহমেদ/আরএআর