অনুদান আমাদের কষ্ট আরও বাড়িয়ে দেয়

‘আদিত্য তার বাবার সঙ্গে খেত, একসঙ্গে খেলত, এখন আর তা পারবে না। কারণ তার বাবা আর কোনো দিন ফিরে আসবে না। তাই এসব সহায়তা ও অনুদান আমাদের কষ্ট আরও বাড়িয়ে দেয়।’
মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) দুপুরে চৌমুহনী পৌরসভার মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে মানবিক সহায়তা গ্রহণ শেষে নিহত যতন সাহার স্ত্রী লাকি রানী সাহা (৩৫) এসব কথা বলেন।
আমেনা নূর ফাউন্ডশনের সার্বিক সহযোগিতায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি আয়াজিত ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ১০ লাখ টাকার এ মানবিক সহায়তা হস্তান্তর করা হয়।
এ সময় নিহত প্রান্ত চন্দ্র দাস ও যতন সাহার পরিবারকে এক লাখ টাকা করে প্রদান করা হয়। এ ছাড়া হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ৭টি মন্দির ৫০ হাজার টাকা করে, ৭টি পূজামণ্ডপে ২৫ হাজার টাকা করে এবং আহতদের ২০ জনকে ১০ হাজার করে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি অংশ নেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
লাকী সাহা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজ ১৬ দিন হয়েছে যতন সাহা নেই। অনেকে এসে সহায়তা করছেন। কিন্তু এই সহায়তা দিয়ে কী হবে? এমন সহায়তা আর অনুদানে আদিত্যের বাবা ফিরে আসবে না।

শোকে পাথর হয়ে গেছি উল্লেখ করে লাকি রানী সাহা বলেন, আমাদের সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিলেন আমার স্বামী (যতন সাহা)। তাকে নির্মমভাবে বিনা কারণে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তার তো কোনো দোষ ছিল না। শিশুসন্তানকে নিয়ে চোখেমুখে কেবল অন্ধকার দেখছি।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্তিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম, যুগ্ম আহায়ক শিহাব উদ্দিন শাহিন ও শহিদ উল্যাহ খান সোহেল, বেগমগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. এবিএম জাফর উল্যাহ, চৌমুহনী পৌরসভার মেয়র খালেদ সাইফুল্লাহ, আমেনা নূর ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ আল জামান।
উল্লেখ্য, গত ১৫ অক্টোবর (শুক্রবার) বিকেলে কুমিল্লার পূজামণ্ডপের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সহিংসতার জের ধরে নোয়াখালীর চৌমুহনীতে বেশ কয়েকটি মন্দিরে হামলা ও পুলিশের সঙ্গে হামলাকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় যতন সাহা (৪২) নিহত হন। নিহত যতন সাহা কুমিল্লা জেলার তিতাস উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত মনোরঞ্জন সাহার ছেলে। তিনি জাইকার একটি প্রজেক্টে চট্টগ্রামে কাজ করতেন।
হাসিব আল আমিন/এনএ