সেনাসদস্য সাইফ হত্যায় ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড

ঝিনাইদহের সেনাসদস্য সাইফুল ইসলাম সাইফ হত্যা মামলায় ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নজরুল ইসলাম হাওলাদার এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় তিনজন আসামি পলাতক ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. আহাদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন ঝিনাইদহের বংকিরার আকিমুল ইসলাম (৩৭), বেড়াইয়ের মিজানুর রহমান (৩৮), আসাননগরের নবীছদ্দিনের আব্বাস আলী (৪০), আসাননগরের কাশেম মন্ডল (৫২), ফারুক হোসেন (৩৫), মতিয়ার রহমান, এনায়েতপুরের মোক্তার হোসেন এবং চুয়াডাঙ্গার ভুলতিয়া এলাকার ডালিম মোল্যা।
এর আগে, বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কারাগার থেকে আসামিদের আদালতের হাজতখানায় নেওয়া হয়।
জানা গেছে, ২০১৮ সালে ১৮ আগস্ট রাতে বংকিরা পশ্চিমপাড়া এলাকার হাফিজ উদ্দীনের দুই ছেলে সাইফুল ইসলাম সাইফ (সেনাসদস্য) ও মনিরুল ইসলাম (নৌসদস্য) বড় ভাইয়ের শ্বশুর সামসুল মোল্লাকে আনতে বদরগঞ্জ বাজারে যান।
রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাড়ির পথে ফেরার সময় বেলতলারদাড়ি নামক স্থানে পৌঁছালে তারা দেখতে পান রাস্তার ওপর গাছ ফেলে রাখা হয়েছে। ডাকাত দলের কাজ সন্দেহ করে তারা মোটরসাইকেল থেকে নেমে বাঁচাও বাঁচাও বলে উল্টো দিকে দৌড় দেন। এ সময় ডাকাত দলের একজন সাইফকে নাগালে পেয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করতে থাকে।
সাইফের শরীরের বিভিন্ন অংশ কুপিয়ে জখম করে তারা। পরবর্তীতে ছোট ভাই মনির বংকিরা বাজারসংলগ্ন পুলিশ ও স্থানীয় জনতার সহায়তায় বড় ভাইকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার পরেরদিন নিহতের বাবা অজ্ঞাতনামা আসামিদের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেন।
মামলাটির তদন্তে নেমে ৮ জন আসামির সম্পৃক্ততার খবর জানতে পারে পুলিশ। যাদের অধিকাংশের বিরুদ্ধে থানায় ডাকাতিসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এ মামলায় গ্রেফতার হওয়া আকিমুল ইসলাম ঘটনায় জড়িত বাকিদের নাম প্রকাশ করে আদালতে জবানবন্দি প্রদান করেন।
২০১৯ সালের ৩০ জুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঝিনাইদহ থানার পুলিশ পরিদর্শক মহসীন হোসেন ৮ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় ২০ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. আহাদুজ্জামান বলেন, ঝিনাইদহের সাইফুল ইসলাম হত্যা মামলাটি খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে স্থানান্তরিত হয়। বিচারক খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে হত্যা মামলাটির বিচার সম্পন্ন করেছেন। ৮ জন আসামির বিরুদ্ধেই হত্যার ঘটনাটি প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক সবাইকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন।
অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ তৌফিক উল্লাহ বলেন, এই মামলার কোনো প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী ছিল না, শোনা সাক্ষীর ওপর ভর করে মামলার রায় দেওয়া হয়েছে। আমরা ন্যায় বিচারবঞ্চিত হয়েছি। আমরা উচ্চ আদালতে যাব।
মোহাম্মদ মিলন/এমএসআর/জেএস