ফারুকের নিরাপদ সবজির বাগান

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে মেঘনা নদীর তীরে গড়ে তোলা হয়েছে নিরাপদ সবজির বাগান। এ বাগানে সবজি চাষে কোনো প্রকার কীটনাশক ব্যবহার করা হয় না। কৃত্রিমভাবে ফাঁদ পেতে ক্ষতিকর পোকা দমন করা হয়। প্রায় ৫৫ বছর বয়সী কৃষক ফারুক কারীর সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।
সরেজমিন শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের মেঘনা নদীর কূলঘেঁষা আলতাফ মাস্টার ঘাট এলাকায় বাগানের মালিক ফারুক কারীকে ফুলকপি, বাঁধাকপি ও টমেটো সংগ্রহ করতে দেখা যায়।
ফারুক উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চরলক্ষ্মী গ্রামের মৃত ইউছুফ ক্বারীর ছেলে। প্রায় ৩০ বছর আগে তার বাবা মারা গেছেন। কৃষি উদ্যোক্তা ছাড়াও তিনি আলতাফ মাস্টার ঘাটের মাছঘাটের সরকার (হিসাবরক্ষক)। তার দুই ছেলে এসএসসি ও জেএসসিতে অধ্যয়নরত।
তিনি জানান, প্রায় সাড়ে চার একর জমিত তিনি উন্নত জাতের ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রকলি, ক্যাপসিকাম, অ্যাশকস, মরিচ, বেগুন, লেটুসপাতা ও টমেটোর চাষ করেন। নিরাপদ হওয়ায় তার সবজির প্রচুর চাহিদা রয়েছে। বাজারে এখন এসব সবজির দাম কম। তবে তার উৎপাদিত সবজির দাম ভালো পাওয়া যায়।
জানতে চাইলে ফারুক ঢাকা পোস্টকে জানান, বাবা মারা যাওয়ার পরর তিনি চাষাবাদে মনোযোগ দেন। তবে তার মা আলেয়া খাতুনের পরামর্শে তিনি ধান চাষ না করে সবজি চাষ শুরু করেন। প্রায় ৩০ বছর ধরে তিনি কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত।
তিনি আরও জানান, মেঘনার তীরবর্তী জমিগুলোয় পলিমাটি ভরপুর। এ জন্য তিনি গত পাঁচ বছর ধরে সবজি চাষে কীটনাশক ব্যবহার করেন না। তার সবজিগুলোও উন্নত জাতের। একেকটি ফুলকপি ও বাঁধাকপি পাঁচ কেজি ওজনের হয়। ফুলকপিগুলোও হয় ধবধবে সাদা।
ফারুক জানান, কীটনাশক ব্যবহার না করে তিনি প্লাস্টিকের পাত্র দিয়ে ফাঁদ দিয়ে ক্ষতিকর পোকা নিধন করেন। এতে ফসলি খেতে আসা পাখিগুলোও বেঁচে যায়। ঘাটে আসা মানুষজন তার এ নিরাপদ সবজিগুলো কিনে নিয়ে যায়। বাগান থেকেই কম দামে ক্রেতারা নিরাপদ সবজি পাচ্ছেন।
ফারুকের উৎপাদিত ক্যাপসিকাম ও লেটুসপাতা আলতাফ মাস্টার ঘাট ও রায়পুর উপজেলার রেস্টুরেন্টগুলোতে বিক্রি করা হয়৷ রেস্টুরেন্ট মালিকরা ফারুককে ক্যাপসিকাম ও লেটুসপাতা চাষে উদ্ভুদ্ধ করেছেন। এ এলাকায় অন্য কোনো কৃষক এসব চাষ করেন না। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে সচ্ছলভাবে জীবনযাপন করাই তার বড় স্বপ্ন।
এনএ