স্বাস্থ্যসচিবের বাড়িতে হামলার ঘটনায় মামলা

স্বাস্থ্যসচিবের বাড়িতে হামলার ঘটনায় অজ্ঞাত ২০-২৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা হয়েছে। শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে কটিয়াদী মডেল থানায় এ মামলা করা হয়। এখন পর্যন্ত এ মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারিনি পুলিশ।
রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে কটিয়াদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে মামলাটি কোন ধারায় ও মামলার বাদী কে তা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন তিনি।
উল্লেখ্য, শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নানের গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার চান্দপুর গ্রামে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়।
মো. আবদুল মান্নান বাড়িতে অবস্থান করছেন এ খবরে শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত দফায় দফায় তার বাড়িতে হামলা ও বাড়ি ত্যাগের আল্টিমেটাম দেয় সশস্ত্র কয়েকশ হামলাকারী। তাদের এই তাণ্ডবের মুখে সচিব মো. আবদুল মান্নান তখন নিজ বাড়িতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
এ সময় তার প্রটোকলে থাকা কটিয়াদী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আশরাফুল আলম ব্যাপক মারপিটের শিকার হন। হামলাকারীরা তাকে মারতে মারতে পুকুরে ফেলে দেয় এবং পরে সেখান থেকে উঠিয়ে গাড়িতে তুলে দেয়।
সে সময় ঘটনাস্থলে থাকা কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মো. মুজিবুর রহমান আত্মরক্ষার্থে কোনো রকমে গাড়িতে ওঠে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে কিশোরগঞ্জ শহরে চলে যান।
এছাড়া এ হামলায় নির্মাণাধীন কমিউনিটি ক্লিনিকের দায়িত্বরত প্রকৌশলীসহ অন্তত ১২ জন আহত হয়।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নানের অভিযোগ, স্থানীয় (কিশোরগঞ্জ-২, কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া আসনের) সংসদ সদস্য সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদের নির্দেশে তার লোকজন ভাঙচুর, মারপিট ও হুমকিসহ এই তাণ্ডব চালিয়েছে। এমন অসহায় পরিস্থিতির মুখোমুখি কোনো দিন তাকে হতে হয়নি বলেও জানান সচিব।
তবে স্বাস্থ্যসচিবের অভিযোগের জবাবে সংসদ সদস্য সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ বলেছেন, একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে তিনি ওয়াকফের জমি দখল করে এলাকায় যা খুশি তা করছেন। এমনকি মাজারের জমি দখল করে সেখানে কমিউনিটি ক্লিনিক করছেন। এ সকল ব্যাপারে এলাকার লোকজন তাকে প্রশ্ন করলে কোনো উত্তর পায় না। এলাকার মানুষ তার অবজ্ঞা, তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের শিকার হওয়ায় তারা রুখে দাঁড়িয়েছে। এর বহিঃপ্রকাশ হিসেবে এ ঘটনাটি ঘটেতে পারে।
এদিকে, স্বাস্থ্যসচিবের বাড়িতে হামলা হওয়ার খবরে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম, পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম (বার), অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল্লাহ আল মাসউদ, র্যাবের ভৈরব ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিউদ্দিন মোহাম্মদ জুবায়ের, কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) তাহিয়াত চৌধুরী, হোসেনপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সোনাহর আলী, কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. আক্তারুন্নেছা, ওসি এম.এ জলিল প্রমুখ ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
এ রকম পরিস্থিতিতে রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) পূর্বনির্ধারিত কিশোরগঞ্জে জেলা পর্যায়ের ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিতি বাতিল করে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে র্যাব ও পুলিশের কড়া প্রহরায় সচিব মো. আবদুল মান্নান ঢাকার উদ্দেশ্যে বাড়ি ত্যাগ করেন।
এসকে রাসেল/এসপি