ঈদকে ঘিরে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম

রমজানের শুরু থেকেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে থাকে দেশের বাজারে। মাছ, মাংস থেকে শুরু করে শাক সবজির দাম বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। এ অবস্থায় ঈদের ১০ দিন আগে থেকেই বাড়ছে তেল, পেঁয়াজ ও আদা-রসুনসহ নিত্যপণ্যের দাম। তবে ব্রয়লার মুরগির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সোমবার (৩ মে) রাজধানীর মুগদা, মাণ্ডা, বাসাবো এলাকার বিভিন্ন বাজার ঘুরে এবং ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
মুগদার ওয়াসা রোডের সবজি বিক্রেতা মিজান বলেন, সবজির দাম কমেনি। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি ঝিঙে, চিচিঙ্গা, বরবটি, বেগুন, কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। কাঁকরোল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, পটল, করলা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। পেঁপে ও ঢেঁড়স ৪০ টাকা, টমেটো ৩০ থেকে ৪০, গাজর ৪০, আলু ২০ থেকে ২২ টাকায় বিক্রি হয়। লাউ ও চালকুমড়া ৪০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি করছি। এছাড়া লেবু প্রতি হালি ২০ টাকা, কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে কেজি ৬০ টাকায়।
শাক বিক্রেতা বারেক জানান, শাকের দাম এক দুই সপ্তাহ ধরে স্থিতিশীল। পুঁইশাক, ডাঁটাশাক, লালশাক ও পাটশাক প্রতি আঁটি ১০ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি করছি। আগেও এ দামেই বিক্রি হয়েছে।

মুদি ব্যবসায়ী আল আমিন বলেন, এখন তেল ও পেঁয়াজের দাম বাড়তির দিকে। সয়াবিন তেলের বোতল এক লিটার ১৩৫ টাকায় বিক্রি করছি। আমার আগের কেনা তাই আগের দাম রাখছি। তবে এখন কেনা বেশি পড়ছে ১৪০ থেকে ১৪২ টাকায় বিক্রি করতে হবে। ৫ লিটার ৬৫০ থেকে ৬৬০ টাকা বিক্রি করেছি। এখন ২০ টাকার মতো বেড়েছে। খোলা সয়াবিন তেল ভালোমানের বিক্রি করছি কেজি ১৩২ টাকা ও সুপার তেল ১২০ টাকা। কেজিতে পাঁচ টাকা করে খোলা তেলের দামও বেড়েছে। আর পেঁয়াজ আগে ৩৫ টাকা বিক্রি হলেও এখন কিনতে হচ্ছে ৩৪ টাকায়। তাই আগের দামে তা বিক্রি করা সম্ভব হবে না। নতুন পেঁয়াজ আসলে প্রতি কেজি ৪০ টাকার ওপরে বিক্রি হতে হবে। এছাড়া গত সপ্তাহের চেয়ে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে দেশি আদা ১০০ ও রসুন ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে চায়না রসুন ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। যা গত সপ্তাহেও ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
এদিকে স্থিতিশীল রয়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। বাজারে গত সপ্তাহের দামেই আজও বিক্রি হচ্ছে সেটি। মুরগি ব্যবসায়ী হাসান জানান, এখন ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করছি ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা। সোনালি (কক) মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায়, লেয়ার (লাল) ২০০ থেকে ২১০ টাকায়।
এছাড়া মুগদা এলাকায় গরুর মাংস ৫৮০ থেকে ৬০০ ও খাসির মাংসের কেজি ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ২৮ থেকে ৩০ টাকায়।
নজরুল নামে মুগদা বাজারের এক ক্রেতা বলেন, বাজারে সব কিছুর দামই বেশি। যাদের আয় সীমিত তাদের পক্ষে বাড়তি দামে পণ্য কেনা কষ্টকর। না খেয়ে থাকা যায় না, আয়ও বাড়ে না উল্টো কমে। এখন সংসারের খরচ মেটাতেই আমরা হিমশিম খাচ্ছি। এটি বলে লাভ নেই। কারণ বাজারে দাম বাড়লে নিয়ন্ত্রণে কেউ নেই। যদি থাকতো তাহলে ২০ টাকার বেগুন ৬০ টাকা, ৪০ টাকার তরমুজ ঢাকায় ৪০০ টাকায় কীভাবে বিক্রি হয়? খেটে মরে কৃষক, কষ্ট করে আয় করি আমরা, আর মাঝে গলা কেটে টাকা নিচ্ছে ব্যবসায়ীরা।

এদিকে আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে মাছ। সোমবার প্রতি কেজি রুই, কাতলা ২৬০-৩৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১২০-১৬০, আইড় ৪০০-৫০০ টাকা, মেনি মাছ ৩০০-৪০০, বাইলা মাছ ২৫০-৪০০ টাকা, বাইন মাছ ৩০০-৪০০ টাকা, গলদা চিংড়ি ৬০০-৮০০ টাকা, পুঁটি ২৮০-৩০০ টাকা, পোয়া ৩০০-৪০০ টাকা, মলা ২৫০-৩৫০ টাকা, পাবদা ২৫০-৩৫০ টাকা, বোয়াল ৪০০-৫০০ টাকা, শিং ও দেশি মাগুর ৪০০-৫০০, শোল মাছ ৪০০-৫০০ টাকা, টাকি মাছ ৩০০ টাকা, পাঙাস ১৩০-১৬০ টাকা, চাষের কৈ ১৫০-২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়।
বাজারে ছোট দানার মসুর ডাল ১০০ টাকা এবং মোটা দানা ৭০ টাকা, মুগ ডাল ১২০ টাকা, মটর ডাল ১০০ টাকা, ছোলা ৬০ থেকে ৭০ টাকা আর খেসারি ৭৫ টাকা, ডাবলি ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া অ্যাংকর ডালের বেসন ৬০ টাকা, বুটের ডালের বেসন ১০০ টাকায় বিক্রি হয়।
এসআই/এসকেডি