ঋণ আদায়ে মামলা না করায় কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নির্দেশ

ঋণ আদায়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় চট্টগ্রামে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দিয়েছেন।
আদেশে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে ৯০ কার্য দিবসের মধ্যে আদালতকে অবহিত করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
আরও পড়ুন
আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম শাহেদ বলেন, ‘মামলায় আজ কোর্ট ফি দাখিলের দিন ধার্য ছিল। আরজি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৪ সালে বিতরণ করা ঋণ মঞ্জুরিপত্রের শর্ত মোতাবেক পরিশোধ না করার পরও ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাদি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কোনো মামলা দায়ের করেনি। পরে এ ঘটনায় আদালত সংশ্লিষ্টর ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়ে বিবাদীদের প্রতি সমন ইস্যু করেন।’
আদালত সূত্রে জানা যায়, ঋণ নিয়ে দীর্ঘদিন পরিশোধ না করায় গত ৭ জানুয়ারি ১৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যবসায়ী মোহাম্মদ নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। মামলার আরজিতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ উল্লেখ করেন, ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনার জন্য নুরুল ইসলাম ঋণ সুবিধা পাওয়ার জন্য ২০০০ সালের মে মাসে ১০ লাখ টাকা ঋণ পেতে ব্যাংকে আবেদন করেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে ওই সময় ১০ লাখ টাকার সিসি লিমিট রেখে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ওই ঋণ মঞ্জুর করে। এরপর বছর বছর ওই ঋণের সীমা বাড়িয়ে ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে ৫ কোটি ৭০ লাখ টাকার ঋণ প্রদান করা হয়।
এরপর খেলাপি হওয়া ঋণ বিবাদির আবেদনের প্রেক্ষিতে মঞ্জুরিপত্র দ্বারা পুনঃতফসিল করে টার্ম লোনে রূপান্তরিত করা হয়। এক বছর গ্রেস পিরিয়ড পার হওয়ার পরপর তিন কিস্তির মধ্যে দুই কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থতায় পুনঃতফসিল সুবিধা বাতিল করে ঋণটি মন্দা ক্ষতি মানে শ্রেণিভুক্ত করা হয়।
২০১৪ সালে বিতরণ করা ঋণ মঞ্জুরিপত্রের শর্ত মোতাবেক পরিশোধ না করার পরও ২০২৪ সাল পর্যন্ত খেলাপি ঋণ আদায়ে অর্থঋণ আদালত আইনের ৪৬ ধারা মোতাবেক মামলা দায়ের করা হয়নি।
আদেশের পর্যালোচনায় উল্লেখ করা হয়, ইচ্ছেকৃত ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে অবহেলা এবং শৈথিল্যের কারণে ব্যাংক ঋণের নামে নাগরিকদের আমানতের অর্থ লুটপাটে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কিছু সংখ্যক ব্যবসায়ী। এই ক্ষেত্রে আর্থিক এবং ব্যাংক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা পর্ষদ ও শীর্ষ নির্বাহীদের যোগসাজশ প্রমাণিত হলেও আইনগত সীমাবদ্ধতার কারণে তারা পার পেয়ে যান। এই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্তৃত্ব এবং তদারকি প্রয়োজন।
আরএমএন/এমএসএ