দু’শর নিচে পাঙাস, অপরিবর্তিত গরু-মুরগির দাম

গত দুই মাস আগের তুলনায় মাছ-মাংসের দাম কিছুটা সাধ্যের মধ্যে আসায় স্বস্তি ফিরেছে নিন্ম-মধ্যবিত্তদের মধ্যে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজকের বাজারে পাঙাস, তেলাপিয়া ও সরপুঁটি মাছ বিক্রি হচ্ছে দুইশ টাকার নিচে। এমনকি ব্রয়লার মুরগিও বিক্রি হচ্ছে দুইশো টাকার মধ্যেই। তবে গরু-খাসির মাংস অপরিবর্তিত রয়েছে বলেও বাজার সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) রাজধানীর রামপুরা-বনশ্রী এলাকার বাজার ঘুরে এবং বাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আজকের বাজারে মাঝারি সাইজের পাঙাস মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজি, কিছুটা বড় পাঙাস বিক্রি হচ্ছে ২৩০-২৫০ টাকাতে। তেলাপিয়া মাছও বিক্রি হচ্ছে একই দামে ১৮০-১৯০ টাকা। বাজারে সরপুঁটি মাছ ২০০ টাকার মধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া শিং মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৪০০ টাকায়, বড় আকৃতির রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়, ছোট আকৃতির রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকার নিচে। পাবদা মাছ ৩৫০ টাকা, কার্প ২২০-২৪০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, মলা মাছ ৩৫০ টাকা এবং শোল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজিতে।
আরও পড়ুন
এদিকে বাজারে গত সপ্তাহের মতোই স্থিতিশীল অবস্থা দেখা গেছে গরু-মুরগির মাংসের দামে। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা পর্যন্ত। প্রতি কেজি খাসির মাংস ১১০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১০০০ টাকায়। গরুর কলিজা বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা এবং খাসির কলিজা বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত।
এছাড়াও আজকের বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ টাকা থেকে ২১০ টাকা পর্যন্ত, সাদা লেয়ার ২৫০ টাকা, লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায় এবং প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩২০ টাকায়। এমনকি আজকের বাজারে দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৫৫০ টাকায়।
বাজারের মাছ ও মাংসের দাম তুলনামূলক কম থাকায় স্বস্তি ফিরেছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের মধ্যে। শহিদুল ইসলাম নামক এক ভ্যানচালক বলেন, মাছ-মাংসের দাম কিছুটা কম থাকায় কোনোরকম খেয়েপরে পরিবার নিয়ে চলা যাচ্ছে। পাঙাস মাছ কিনেছি ১৮০ টাকা কেজি করে। এছাড়াও কিছু শাকসবজি কিনেছি। মাছসহ সবমিলিয়ে তিনশো টাকার করেছি, পুরো ব্যাগ ভরে গেছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার যদি বাজারের দিকে একটু নজর দেন, তাহলে জিনিসপত্রের দাম আরও কমে যাবে। এখন তো ব্যবসায়ীরা সুযোগ বুঝে দাম কমায় বাড়ায়। এই সরকারের কাছে আমাদের মতো মানুষের অনেক প্রত্যাশা।
বেসরকারি এনজিও কর্মী আশরাফুল ইসলাম বলেন, গরুর মাংস নিয়েছি ৭৫০ টাকায়। এটা একটু কমতে পারে। এর আগেও ৬৫০ টাকা করে বিক্রি করে মাংস বিক্রেতা খলিলসহ অনেকে দেখিয়ে দিয়েছেন। তাহলে অন্যরা কেন কমে বিক্রি করতে পারে না? সবকিছুই আসলে ব্যবসায়ীদের মর্জির ওপর নির্ভর করে।
মাছের দাম তুলনামূলক কম থাকায় ক্রেতাদের হাসিমুখে খুশি মাছ বিক্রেতা মোহাম্মদ শওকত মিয়া। তিনি বলেন, এ সপ্তাহে মাছের বাজারে দাম কিছুটা নিম্নমুখী, তবে বেচাকেনা আলহামদুলিল্লাহ ভালো। দাম একটু কম থাকলে সবসময়ই বেচাকেনা ভালো থাকে। অনেক সময় সকালেই সব মাছ বিক্রি হযে যায়, আবার বাজার বাড়তি থাকলে বফর দিয়ে পরদিনও বিক্রি করতে হয়।
মুরগির মাংস বিক্রেতা শফিক মিয়া বলেন, শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় অন্যান্য দিনের তুলনায় এই দিনে মুরগির চাহিদাটা একটু বেশিই থাকে। তবে দাম গত সপ্তাহের তুলনায় একটু কমেছে। গত সপ্তাহেও ২১০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি করেছি, আজকে ২০০ টাকায় দিয়ে দিচ্ছি। খামারি পর্যায়েই বেশি দামে কিনলে আমাদেরও দামটা বাড়াতে হয়, কমে আসতে পারলে কমেই বিক্রি করি। আলহামদুলিল্লাহ, ভালো বিক্রি হচ্ছে।
টিআই/এআইএস