গরিবের নাগালের বাইরেই থাকছে ব্রয়লার মুরগি, পাঙাশ মাছ

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বেশ চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মুরগি। গত মাসের মাঝামাঝি সময়ের পর থেকেই একটু একটু করে বাড়তে থাকা মুরগির দাম। বিশেষ করে দামে ডাবল সেঞ্চুরি পার করেছে ব্রয়লার মুরগি। ফলে সাধারণ ক্রেতাদের কাছে সহজলভ্য আমিষের উৎস ব্রয়লার মুরগির দামও এখন নাগালের বাইরে। এতে পরিবারের জন্য ন্যূনতম আমিষ কিনতেও হিমশিম খাচ্ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। এছাড়া ছোট-বড় বিভিন্ন জাতের মাছের দামও অপরিবর্তিত রয়েছে। বিশেষ করে একসময়ের কম দামের পাঙাশও এখন ছুঁয়েছে প্রায় তিনশ টাকা।
এমন অবস্থায় বিক্রেতারা বলছেন খুব শিগগিরই দাম কমার সম্ভাবনা নেই।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর উত্তরার ৬ নম্বর সেক্টর কাঁচাবাজার (আজমপুর কাঁচাবাজার) মার্কেট ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০-২২০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩২০-৩৩০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৮০-২৯০ টাকা, এবং দেশি মুরগি ৫৫০ থেকে ৫৮০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। এর সঙ্গে বাড়তি চাহিদা রয়েছে হাঁসের৷ প্রতিকেজি হাঁস ৫৫০-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মুরগির বেশি দাম নিয়ে বিক্রেতারা বলছেন, শীতের দিনে ঠান্ডার কারণে মুরগির বাচ্চা অসুস্থ হয় বেশি। ফলে লোকসানের সম্ভাবনায় খামারিরা বাচ্চা কম তোলেন। যার কারণে বাজারে চাহিদা অনুযায়ী যোগান কম থাকে। সেজন্য পুরো সময়জুড়ে চাহিদার চেয়ে যোগান কম থাকে। ফলে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বাড়তি দামেই ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়। এরসঙ্গে অন্য মুরগির দামও বেশি থাকে।
মায়ের দোয়া ব্রয়লার হাউজের বিক্রেতা মামুন হোসেন বলেন, সবসময় ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। তবে শীত শুরুর পর দাম বেড়েছে। চাহিদা অনুযায়ী বাজারে পর্যাপ্ত মুরগি নেই। সেজন্য এখন দাম বেশি। শীত শেষ না হলে বাজারে পর্যাপ্ত মুরগি আসার সম্ভাবনাও কম। তাই দাম কমার সম্ভাবনাও কম।
মোতাসিম বিল্লাহ নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, আমাদেরকে পাইকারি মার্কেট থেকেই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। যার প্রভাব খুচরা বাজারেও পড়েছে। ব্রয়লার গত সপ্তাহে ২০০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। এখন ২২০ টাকা বিক্রি না করলে লাভ কিছুই থাকে না। আর অন্য জাতের মুরগিগুলো তো এমনিতেই সবসময় দাম বেশি থাকে।
এছাড়া গরুর মাংস হাড়সহ ৮০০ টাকা এবং হাড়ছাড়া ১০০০ টাকা এবং ছাগল-খাসির মাংস ১০০০-১২০০ টাকা কেজি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, আগের চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে মাছ। তেলাপিয়া কিংবা পাঙাশ, কার্ফু কিংবা ব্রিগেড দাসব মাছের মই তুলনামূলকভাবে বেশি। একটু বড় সাইজের পাঙাশ মাছ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩০০ টাকা পর্যন্ত।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি কেজি বড় রুই মাছ ৩৫০-৪৫০ টাকা, মাঝারি রুই মাছ ৩৬০-৪০০ টাকা, রুই মাছের পোনা ২০০-২৫০ টাকা, কাতলা মাছ ৩০০-৩৫০ টাকা, ছোট পাঙাশ মাছ ১৯০-২০০ টাকা, পাবদা মাছ (আকারভেদে) ৪০০-৬০০ টাকা, গলদা চিংড়ি (আকারভেদে) ৬৫০-৭৫০ টাকা ও শিং মাছ (দেশি ও থাই) ৩০০-৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আবার ছোট, মাঝারি, বড় ইলিশ মাছ যথাক্রমে ৭০০-৮০০, ১০০০-১৩০০ ও ১৬০০-২০০০ টাকা কেজি দামে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়াও বিভিন্ন ছোট মাছও বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে। কাঁচকি মাছ ৩০০ টাকা, মলা মাছ ৩০০-৪০০ টাকা, কৈ মাছ ৩৬০ টাকা কেজি দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে দোকান ও মানভেদে এসব মাছের দাম ৫০-৬০ টাকা পর্যন্ত কমবেশি হতে দেখা গেছে।
আরএইচটি/এমএসএ