বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বাউল শিল্পী ‘গামছা ডালিমের’ মৃত্যু

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বাউল শিল্পী গামছা ডালিমের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুরে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের বিলে গভীর নলকূপের বৈদ্যুতিক ট্রান্সফার মেরামতের সময় বৈদ্যুতিক শক্ সার্কিটে তার মৃত্যু হয়।
তার পুরো নাম তরিকুল ইসলাম ডালিম। সংগীতাঙ্গনে তাকে সবাই চেনে গামছা বাউল ডালিম নামে। রাজশাহীর দুর্গাপুর পৌর সদরের হরিপুর গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে ডালিম।
আরটিভির জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘বাংলার গায়েন সিজন-২’ তে ইয়েস কার্ড পেয়ে আলোচনায় এসেছিলেন এই শিল্পী। ডালিম গান চর্চার পাশাপাশি জীবন-জীবিকার তাগিদে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) গভীর নলকূপ মেরামতের কাজ করতেন। সেখানে তিনি মাস্টারলে কাজ করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুরে শ্রীপুর গ্রামের বিলে গভীর নলকূপের বৈদ্যুতিক ট্রান্সফার মেরামতের কাজ করছিলেন তিনি। এসময় বৈদ্যুতিক শক্ সার্কিটের কারণে মারাত্মকভাবে আহত হয় ডালিম। সেখান থেকে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে স্বজনরা সেখান থেকে তার মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসে।
আরও পড়ুন
নিহতে চাচা সাইদুর রহমান জানান, ডালিম বরেন্দ্র অফিসের একজন ইলেকট্রিশিয়ান। গভীর নলকূপ ডিপ টিউবওয়েলে বৈদ্যুতিক সমস্যা দেখা দেয়। খবর পেয়ে সে সমস্য সমাধানের জন্য সেখানে যান। এরপর সেই ডিপের ছাদের উপরে লোহার মই দিয়ে কাজ করার সময় বৈদ্যুতিক তারের সঙ্গে লেগে যায় সেই মইটি। এসময় সে ছিটকে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়রা খবর পেয়ে দ্রুত তাকে উদ্ধার করে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ডালিমের স্ত্রী ও ছোট দুইটি মেয়ে সন্তান রয়েছে।
এ বিষয়ে দুর্গাপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুরুল হোদা বলেন, ‘ডালিম নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর শুনেছি। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ শেষ মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’
প্রতিবেশি রঞ্জু বলেন, ‘নিহত ডালিম, বাউল গামছা ডালিম নামে পরিচিত। সে ছোট বেলা থেকেই গান-বাজনা নিয়ে থাকতেন। দেশে অনেক গানের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন তিনি। বেসরকারি বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেলেও গান করেছেন তিনি। আরটিভি রিলেটি শো বাংলার গায়েন প্রতিযোগিতায় সে ৩০তম স্থান অধিকার করেছিলেন। ডালিম গানের পাশাপাশি গত ১০ বছর থেকে দুর্গাপুর বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন অফিসের মাস্টারোলে সহকারী ইলেকট্রিশিয়ানে চাকরি করে আসছেন। সে মানুষের কাছে একজন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী হিসেবে বেশি পরিচিত ছিলেন।’
এদিকে এমন ঘটনায় শিল্পী সমাজ ও উপজেলা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
শাহিনুল আশিক/এমআইকে