‘আমরা সব সময় একসঙ্গে ছিলাম না’

বলিউডের অন্যতম শীর্ষ অভিনেতা অনুপম খের, যার অভিনয়শৈলী দশকের পর দশক ধরে দর্শকদের হৃদয় জয় করে চলেছে। পর্দায় তিনি যেমন অসংখ্য চরিত্রে প্রাণ দিয়েছেন, তেমনই বাস্তব জীবনে তিনি এক অনন্য চরিত্রে উজ্জ্বল— একজন স্বামী হিসেবে। তিনি বিয়ে করেন অভিনেত্রী থেকে রাজনীতিক হয়ে ওঠা কিরণ খেরকে।
শাহরুখ খান, রানি মুখোপাধ্যায়, অমিতাভ বচ্চনের মতো বলিউডের প্রায় সব মহাতারকার সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। তবু অনুপম খেরের জীবনের সবচেয়ে সত্যনিষ্ঠ, হৃদয়স্পর্শী চরিত্রটি ছিল— কিরণ খেরের পাশে একজন জীবনসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা।
ভারতীয় গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অনুপম খের বলেন, ‘মানুষকে চেনা যায় তার কঠিন সময়ে নেওয়া সিদ্ধান্ত দিয়ে, ভালো সময়ে নয়। তখনই চরিত্রের আসল রূপ প্রকাশ পায়, তখনই বোঝা যায় আপনি কতটা দৃঢ়। কেউ জানে না, আমি এই পরিস্থিতিতে কীভাবে আচরণ করব, কারণ আপনি জানেন না, জীবনের বা সম্পর্কের কোন মোড়ে কী অপেক্ষা করছে। আপনি পরের মুহূর্ত জানেন না। কিন্তু আমি সব সময়ে বলি, কঠিন সময়ে আপনি কী ভাবে আচরণ করেন, কী ভাবে প্রতিক্রিয়া দেন— সেটাই ঠিক করে আপনি কেমন মানুষ।’
আরও পড়ুন
‘কিরণ আর আমি আমাদের বিবাহিত জীবনের ৪০ বছর পূর্ণ করেছি। আমরা সব সময় একসঙ্গে ছিলাম না, কিরণ ১০ বছর এমপি ছিল তাই ও যেত-আসত। আমি তখন আমেরিকায় নিউ অ্যামস্টারডম নামে একটি সফল শো করছিলাম, যার তিনটি সিজনের এক্সটেনশনও পেয়েছিলাম।
তিনি আরও বলেন, ‘তৃতীয় সিজন শুরু করার সময় জানতে পারি, কিরণ মাল্টিপল মায়েলোমায় আক্রান্ত। তখনই আমার প্রথম প্রতিক্রিয়া ছিল— আমার ওর পাশে থাকা উচিত। আমি ডাক্তার নই, কিন্তু আমি বলেছিলাম, তবুও আমি আসব। ও বলেছিল, এসো। স্বাভাবিক ভাবেই ও বিধ্বস্ত ছিল, কারণ এই শব্দটাই ভয়ঙ্কর। আমি বলেছিলাম, না, আমি এই শো ছেড়ে দেব।’
সুখী ও সফল সম্পর্কের বিষয়ে অভিনেতার ভাষ্য, ‘সম্পর্কে সাহস খুব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সাহসই ঠিক করে আপনি কী সিদ্ধান্ত নেবেন। পেশাগত ভাবে, ওই শো-তে থাকা আমার জন্য বিশাল ব্যাপার ছিল। আর্থিক ভাবে, সেটাও বড় সিদ্ধান্ত ছিল। আমার স্বপ্ন ছিল আন্তর্জাতিক অভিনেতা হওয়া, এবং ওই শো তা পূরণ করতে পারত। কিন্তু আমার কাছে ফিরে আসা ছিল আরও গুরুত্বপূর্ণ। আমি ফিরে এসে শুধু ওর পাশে বসে থাকিনি, কিন্তু এটা এমন কিছু যা একজন স্বামী হিসেবে করা উচিত।’
এমআইকে