ঘানায় অদ্ভুত কফিনে সমাহিত করা হয় অনেককে, দেখুন ছবিতে

ঘানার দক্ষিণপূর্বাঞ্চলের ‘গা’ জাতির অনেক মানুষ মৃতদের অদ্ভুত কফিনে সমাহিত করেন। সুইজারল্যান্ডের অ্যাকাডেমিক রেগুলা রুৎশুমি দীর্ঘ ২০ বছর এসব অদ্ভুত সমাহিতের ছবি তুলেছেন। এমনকি এ নিয়ে বই লিখেছেন। যেখানে ২০০৪ সাল থেকে ২০২৪ সালের বিভিন্ন অন্তোষ্টিক্রিয়ার ছবি রয়েছে—
ঘানার গ্রেটার আক্কারার নুনগুয়া গ্রামের সর্বোচ্চ নেতা নীল আগবেটেকোরের অন্তোষ্টিক্রিয়ার ছবি। তার মরদেহ রাখা হয়েছিল সিংহ আকৃতির একটি কফিনে। ২০২৪ সালে এটি অন্যতম জাঁকজঁমকপূর্ণ একটি অন্তোষ্টিক্রিয়া ছিল।
এক আনারস বিক্রেতার মরদেহ রাখা হয়েছে আনারস আকৃতির কফিনে। ২০১৯ সালে তার মৃত্যু হয়। কফিনের আকৃতি কেমন হবে সেটি সাধারণত মৃতের পরিবার ঠিক করে থাকেন।
এই কফিনগুলো সম্পূর্ণ হাতেই তৈরি করা হয়। যারা এগুলো তৈরি করেন তারা ছোট একটি রুমে কাজ করে থাকেন। ২০২৪ সালের একটি অন্তোষ্টিক্রিয়ায় দেখা যাচ্ছে কাঁকড়া আকৃতির কফিন। এটি ছিল এক নির্মাতার। তার ডাক নাম ছিল কাঁকড়া। এ কারণে তাকে কাঁকড়া আকৃতির কফিনে সমাহিত করা হয়।
২০২৪ সালে গ্রেটার আক্কারার প্রধানের জন্য তৈরি করা হয়েছিল তিমি হাঙর আকৃতির কফিন। এটি শুভর প্রতীক। কারণ এই জাতটিকে হাঙরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী এবং বড় হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
২০২৩ সালে ট্রেনের বগির আদলে তৈরি করা একটি কফিন। এটি বানানো হয়েছিল ঘানা রেলওয়ের এক কর্মচারীর জন্য।
২০১৫ সালে এক ট্রাক চালককে বেডফোর্ড ট্রাকের আদলে তৈরি করা কফিনে সমাহিত করা হয়েছিল। ওই ট্রাক চালক এই মডেলের ট্রাক চালাতেন।
ঘানায় মৃতদের অন্তোষ্টিক্রিয়ায় অন্যান্য সংস্কৃতিরও প্রচলন রয়েছে। এরমধ্যে একটি হলো মৃতদেহ ও কফিন নিয়ে গানের তালে তালে নৃত্য করা। বেঞ্জামিন আইদু (মাঝে কালো টুপি পরিহিত) এ ধরনের কাজ করে থাকেন। ২০২২ সালে ছবিটি তোলা হয়। তার সঙ্গে তার প্রিয় বন্ধু ও সহকর্মীরা রয়েছে। এখানে তারা ‘স্কটিশ রেড’ পোশাক পরে আছেন। তিনি ২০১৭ সালে এ সংস্কৃতি শুরু করেন। যা পরবর্তীতে গ্রেটার আক্কারায় জনপ্রিয়তা পায়।
২০১৭ সালে গ্রেটার আক্কারার মানুষকে অবাক করে দিয়েছিল এ ঘটনা। তারা দেখতে পান এক ব্যক্তি তার মৃত স্বজনের জন্য ‘কফিন ড্যান্সারদের’ নিয়ে এসেছেন। যারা ট্রাক আকৃতির একটি কফিন নিজেদের কাধে নিয়ে নৃত্য পরিবেশন করছেন। ঘানায় কফিন নিয়ে নৃত্যের বিষয়টি ওই সময় নতুন ছিল। যা শুরু করেন বেঞ্জামিন আইদু।
বেঞ্জামিন আইদুর কোম্পানি অন্তোষ্টিক্রিয়ার দিন ও এর আগের দিন বিভিন্ন কাজ করে থাকে। ২০২৪ সালে তোলা এ ছবিতে দেখা যাচ্ছে এক মাছ ব্যবসায়ীর মরদেহ মাছ আকৃতির কফিনে রাখা হয়েছে। তবে মাছ কফিনটির লেজটি এতটাই বড় ছিল যে, এটি কবরে জায়গা হচ্ছিল না। পরবর্তীতে কফিনটি করাত দেয় কেটে ছোট করা হয়।
অন্তোষ্টিক্রিয়ার আগেরদিন কিছু পরিবার মৃত স্বজনের মরদেহ সাজিয়ে গুজিয়ে রাখেন। এ সময় শোকার্ত মানুষ শোক জানিয়ে যান। মৃতদেহ সাধারণত শুইয়ে রাখা হয়। আবার অনেককে বসিয়েও রাখা হয়।
সূত্র: সিএনএন
এমটিআই